শিক্ষা সংবিধানের যৌথ তালিকাভুক্ত, অর্থাৎ কেন্দ্র ও রাজ্য, উভয় সরকারেরই এ সংক্রান্ত দায় রয়েছে। এই আইনে ‘যথাযথ সরকার’ বলতে বোঝায় এদের মধ্যে যে কোনও একটি সরকার বা আইনসভা আছে এমন কোনও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সরকার, যেমন দিল্লি। আইনের ২(ক) ধারায় এর পুরো সংজ্ঞা রয়েছে।
আগেই বলা হয়েছে, এটা করা হয়েছিল আইনটিকে ২১ক অনুচ্ছেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার মধ্য দিয়ে। আর সরকারের এই সিদ্ধান্ত এই আইনের দ্বারাই সংসদের অনুমোদন পেয়েছিল। পুরনো ৪৫ নং অনুচ্ছেদ এবং উন্নিকৃষ্ণন মামলার রায়, দুই-ই ০-৬ বছরের বয়ঃসীমাকে অন্তর্ভুক্ত করেছিল। কিশোর ন্যায়বিচার আইন ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত যে কোনও ব্যক্তিকে শিশুর সংজ্ঞার মধ্যে রাখে। রাষ্ট্রপুঞ্জের শিশু অধিকার সংক্রান্ত সনদও (ইউএনসিআরসি), যেখানে ভারতও সাক্ষর করেছে, ০ থেকে ১৮ বছর পর্যন্ত বয়সকে শৈশব হিসেবে ধরে। নীতিগত ভাবে, শিক্ষার অধিকার আইনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের স্থানে, কিশোর ন্যায়বিচার আইন, ইউএনসিআরসি এবং ২১ নং অনুচ্ছেদ (বেঁচে থাকার অধিকার)-এর উল্লেখ করে বয়ঃসীমা ০-১৮ করা যেত। কিন্তু অর্থনৈতিক বাধ্যবাধকতা দেখিয়ে বর্তমান আইনকে ২১ক অনুচ্ছেদে ৬-১৪ বছরের মধ্যে আটকে রাখা হয়েছে। আইন সংশোধন করে ০-১৮ বছরকে শিশুর বয়স হিসেবে মান্যতা দেওয়ার জন্য জনগণের দিক থেকে বিপুল চাপ বজায় রাখতে হবে।
এই আইন স্কুল শিক্ষাকে একটি ত্রিপাক্ষিক অংশীদারিত্বের বিষয়ে পরিণত করেছে ---জনগোষ্ঠী (স্কুল পরিচালন কমিটি), পিআরআই এবং সরকার। ২(জ) সংজ্ঞা থেকেই এটা প্রমাণিত যে, স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে সংজ্ঞায়িত করার উদ্দেশ্যই হল, পঞ্চায়েতি রাজ প্রতিষ্ঠানগুলিকে যুক্ত করে প্রশাসনকে বিকেন্দ্রিকৃত করা। যদিও যে হেতু বিভিন্ন রাজ্যের পরিস্থিতি আলাদা, তাই এই বিষয়টিকে নমনীয় রাখা হয়েছে এবং যথাযথ স্থানীয় কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট করার দায়িত্ব রাজ্য সরকারকেই দেওয়া হয়েছে । উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, পশ্চিমবঙ্গে ইতিমধ্যেই একটি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ আছে, যাকে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বলে রাজ্য মান্যতা দিতে পারে। তেমনই মেঘালয়ের মতো উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে জেলা পর্ষদ রয়েছে, যেগুলিকে তারা চাইলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বলতে পারে।
সর্বশেষ সংশোধন করা : 8/30/2019