কয়লার দহন থেকে বাতাসে কার্বন ডাইঅক্সাইড মেশে, সেই কার্বন ডাইঅক্সাইড বাতাসে গ্রিন হাউস গ্যাসের পরিমাণ বাড়িয়ে বিশ্ব উষ্ণায়নের সমস্যাটি ঘনীভূত করে। কয়লাকে নিয়ে সঙ্কট শুধু এই জায়গাটিতেই, এমনটি ভাবলে ভুল হবে। কয়লাকে নিয়ে আরও যে সব বড় সমস্যা পাকিয়ে উঠছে তা হল মাটির তলায় দ্রুত ফুরিয়ে আসছে কয়লার ভাণ্ডার।
ভারতে কয়লার সঞ্চয় ঠিক কতটা তা নিয়ে অবশ্য কিছু পরস্পরবিরেোধী তথ্য পাওয়া যায়। যেমন, সাধারণ ভাবে বলা হয় ভারতে কয়লার যে সঞ্চয় তা দিয়ে বর্তমান হারে উৎপাদন করলে আরও ১৪০ বছর চলে যাবে। কিন্তু একাদশ পরিকল্পনার দলিলেই বলা হয়েছিল, যদি কয়লার উৎপাদন প্রতি বছর মাত্র ৫ শতাংশ হারে বাড়াতে হয় তা হলে যতটা কয়লা রয়েছে তা দিয়ে চলবে মাত্র ৪৫ বছর। দু’টি পরিসংখ্যানে এতটা তফাৎ হওয়ার কারণ কী? কারণ এই যে মাটির তলায় কতটা কয়লা আছে শুধু সেটা ভাবলেই চলবে না। ভাবতে হয় মাটির কতটা তলায় তা আছে। বর্তমান প্রযুক্তিবিদ্যার সাহায্যে তার সবটা তুলে আনা যাবে কিনা, কয়লা যেটা আছে বলে বলা হচ্ছে, তার গুণগত মান কেমন, তুলে আনলে খরচ বাদ দিয়ে আখেরে লাভ কিছু হবে কিনা। এমনিতে ভারতে কয়লার গুণগত মান প্রথম হিসেবে এই সব কিছু ভাবা হয়নি। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে হয়েছে। হিসেবের তফাৎ এই কারণেই। তবে তফাৎ থাকলেও সঙ্কটটা কিন্তু তাতে এড়ানো যায় না। আজ হোক বা কাল, তা তো ঘটবেই। সুতরাং বিকল্প জ্বালানির কথা কিন্তু ভাবতেই হবে।
জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সবসময় মাথায় রাখতে হবে এর ভান্ডার অত্যন্ত সীমিত। তাই এ ধরনের জ্বালানি ব্যবহারের মানচিত্র স্থির করা দরকার। সবচেয়ে ভল হয় জীবাশ্ম জ্বালানির সঙ্গে বিকল্প জ্বালানি মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারলে। কতটা জীবাশ্ম জ্বালানির সঙ্গে গ্রিডে কতোটা বিকল্প পদ্ধতিতে উৎপন্ন জ্বালানি মেশানো যায় তার আগাম হিসাব করা জরুরি।
সূত্র : যোজনা, মে ২০১৪
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/29/2020