২০০১ সালের জ্বালানি সংরক্ষণ আইনে জ্বালানির সুদক্ষ ও যথাযথ ব্যবহার এবং সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে। এই আইনের আওতায় গঠন করা হয় ব্যুরো অফ এনার্জি এফিসিয়েন্স। জ্বালানির সুদক্ষ ব্যবহার ও সংরক্ষণের কথা এখানে বলা হয়েছে। এই সংক্রান্ত জাতীয় মিশনের আওতায় রচিত হয়েছে বেশ কয়েকটি কর্মসূচিও।
বিপণনভিত্তিক একটি কর্মসূচি চালু করা হয়েছে বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলির জন্য যেখানে জ্বালানি শক্তির ব্যবহার হয় বেশি মাত্রায়। প্রতিটি এ ধরনের জ্বালানি প্রকল্পের জন্য জ্বালানি ব্যবহারের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে দেওয়া হয়েছে।
দ্বিতীয় কর্মসূচিটি তৈরি করা হয়েছে উদ্ভাবনী ব্যবস্থা বা পদ্ধতির মাধ্যমে জ্বালানি সাশ্রয়কারী উৎপাদনের জন্য। আলো, পুর পরিষেবা, কৃষি ইত্যাদি ক্ষেত্রে সুদক্ষ জ্বালানির ব্যবহারই এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। অন্য কর্মসূচির লক্ষ্য গৃহস্থালির জন্য ব্যবহার্য যন্ত্রোপকরণ এবং হোটেল অফিস ও শিল্প প্রতিষ্ঠানে ব্যবহার্য সাজসরঞ্জামের ক্ষেত্রে সুদক্ষ জ্বালানি শক্তির ব্যবহার। পরিবহণ সংক্রান্ত যন্ত্রপাতিকেও এর আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। আর চতুর্থ কর্মসূচিটির মধ্যে রয়েছে জ্বালানি সাশ্রয়কারী সাজসরঞ্জাম যা ব্যবহার করা হয় সাধারণত সর্বসাধারণের ব্যবহার্য অফিস, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ইত্যাদিতে। প্রতি বর্গফুটে কতটা জ্বালানি শক্তির প্রয়োজন হতে পারে তারও দিকনির্দেশ রয়েছে এই কর্মসূচিতে।
দরিদ্র মানুষের কাছে সুলভে পরিষ্কার জ্বালানি পৌঁছে দেওয়া ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি। গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে ২০০৫ সালে চালু করা হয় রাজীব গান্ধী গ্রামীণ বৈদ্যুতীকরণ যোজনা। এই কর্মসূচির আওতায় প্রকল্পের মোট ব্যয়ের নব্বই শতাংশ মঞ্জুর করা হয় মূলধন ভর্তুকি হিসাবে। এবং বাকি দশ শতাংশ ঋণ হিসাবে দেওয়া হয় গ্রামীণ বৈদ্যুতীকরণ নিগমের মাধ্যমে।
২০০৪-৫ সালের জাতীয় নমুনা সমীক্ষার সঙ্গে যদি ২০০৯-১০-এর নমুনা সমীক্ষার তুলনা করা হয়, তা হলে দেখা যাবে যে, গ্রামীণ এলাকায়, গৃহস্থালির কাজে বিদ্যুৎ ব্যবহারের পরিমাণ ৫৪.৯ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৭.৬৩ শতাংশ। শহরাঞ্চলে তা ৯২.৩ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়েছে ৯৩.৯ শতাংশে। দ্বাদশ পরিকল্পনায় লক্ষ করা গিয়েছে যে, গ্রামীণ এলাকায় মাথাপিছু প্রতি মাসে বিদ্যুৎ ব্যবহারের পরিমাণ যেখানে ছিল ৮ ইউনিট, শহরাঞ্চলে সে ক্ষেত্রে ব্যবহারের পরিমাণ ছিল ২৪ ইউনিটের মতো। সমীক্ষায় প্রকাশ, গ্রামে মাত্র ১৫.৫ শতাংশ গৃহস্থ বাড়িতে রান্নার গ্যাস ব্যবহার করা হয়। অন্য দিকে শহরের মানুষ এলপিজি ব্যবহার করে ৬৬.২ শতাংশ-র মতো।
সূত্র : যোজনা, মে ২০১৪
সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/28/2020