আমাদের দেশের কয়লায় রয়েছে প্রচুর ছাই এবং আর্দ্রতা। কয়লা উত্তোলনের ক্ষেত্রে এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন, তার রূপান্তর ও পরিবহণের ফলে উদ্ভুত দূষণ সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এর ফলে বাণিজ্যিক জোগানের ক্ষেত্রে কয়লা ও লিগনাইটের অনুপাতের ক্ষেত্রে বিশেষ হেরফের বা তারতম্য ঘটবে না। অশোধিত তেলের জোগানের ক্ষেত্রে সরবরাহের পরিমাণ ১৬ শতাংশ থেকে কমে ৭ শতাংশে দাঁড়াবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে আশার কথা, প্রাকৃতিক গ্যাসের জোগান বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। জলবিদ্যুৎ উৎপাদন দশ গুণ বাড়ালেও অনুপাতের নিরিখে তা হ্রাস পেয়েছ। অন্য দিকে আমাদের দেশে পরমাণু বিদ্যুতের জোগান প্রায় দ্বিগুণ হওয়ার আশা রয়েছে। তবে লক্ষ্যমাত্রা পূরণের ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে। পুনর্ব্যহারযোগ্য জ্বালানি নিরাপদ, দূষণমুক্ত এবং কর্মসংস্থানভিত্তিক হলেও লক্ষ্যমাত্রা পূরণে প্রয়োজন নীতি সংক্রান্ত কিছু রদবদল।
জ্বালানি ক্রমশ একটি বিরল সম্পদ হয়ে উঠেছে। আগামী দশ বছরে ভারত তার মোট জাতীয় উৎপাদন বাড়াতে চায় ৮ শতাংশ হারে অথচ তার জ্বালানি সম্পদ সীমিত। তাই আশু প্রয়োজন উন্নতমানের নির্ভরযোগ্য জ্বালানির অনুসন্ধান ও জোগান। প্রতিটি প্রাথমিক জ্বালানি সরবরাহের কাজে ব্যয়েরও সীমারেখা টানা উচিত। অন্য দিকে বিদ্যুৎ জোগানের ক্ষেত্রে সরবরাহ শৃঙ্খলে রয়েছে বেশ কিছু অদক্ষতার পরিচয়। ক্ষুদ্র পরিসর, মান্ধাতা আমলের প্রযুক্তি এবং জ্বালানি সরবরাহের ক্ষেত্রে বাধা বিপত্তির ফলে অনেক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রই আজ আর ঠিকমতো কাজ করছে না। কয়লা চালিত টার্বাইন ৩৫ শতাংশ দক্ষতা যোগ করতে পারে এবং প্রাকৃতিক গ্যাস পরিচালিত বিদ্যুৎ প্রকল্পের অবদান এ ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশের মতো।
আর একটি বিষয়ে দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। আমাদের দেশে সরবরাহ, বণ্টন এবং বাণিজ্য সংক্রান্ত ক্ষয়ক্ষতি প্রচুর। এই কারণেই ২০০৮-৯ আর্থিক বছরে ক্ষতির বহর কমিয়ে আনতে চালু হয়েছে দ্রুত শক্তি উন্নয়ন ও সংস্কার কর্মসূচি।
সূত্র : যোজনা, মে ২০১৪
সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/14/2019