আগেই আলোচনা করা হয়েছে যে, স্বচ্ছতার অভাব পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি বাজারের একটা বড় প্রতিবন্ধকতা। এতে প্রতিযোগিতা হ্রাস পায় এবং ছিদ্রান্বেষণের প্রবণতা বাড়ে। নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলি নিয়মিত প্রগতি প্রতিবেদনের মাধ্যমে যথাযথ সময়ে বিশ্বাসযোগ্য এবং ব্যবহার্য তথ্য পরিবেশন করে এই অস্বচ্ছতার প্রতিবন্ধকতা দূর করতে পারে। নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলি যাতে বিভিন্ন পক্ষের কাছে তথ্য চাইতে পারে এবং সময়মতো সাড়া পায়, তার জন্য রাষ্ট্র কর্তৃক যথাযথ অধিকার তাদের দিতে হবে। সরকার সাধারণত বিস্তারিত নীতি প্রনয়ণ করে থাকেন। পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি প্রযুক্তির ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সমস্যা নিরসন করতে সেই নীতি সমর্থ হবে — এমনটা আশা করা যায় না। তাই নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলির দায়িত্ব হল, সুনির্দিষ্ট সমস্যা বা বিরোধ মেটানোর জন্য আইন (বা ক্ষুদ্রনীতি) রচনা করা। জদিও প্রতিটি প্রযুক্তিরই সমস্যা ভিন্নতর, তাই প্রতিটি প্রযুক্তি সম্পর্কে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলির বিশেষজ্ঞ অবহিত হওয়া প্রয়োজন।
পরিশেষে একটা কথা বলা দরকার। সরকার অনেক সময়ে কোনও নির্দিষ্ট প্রযুক্তিকে আনুকূল্য দেখিয়ে ‘বিজেতা’ বাছাই করে। এই ‘বিজেতা’ নির্বাচন এক ধরনের ভ্রান্তি। নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলির উচিত সরকারি খরচ যাতে লাভজনক হয়,সে দিকে লক্ষ রাখা। এর জন্য তত্ত্বাবধান এবং মূল্যায়ন করে লোকসান দূর করার পথ খোঁজা দরকার। অলাভজনক প্রযুক্তিগুলি থেকে সরকারি সাহায্য উপযুক্ত সময়ে প্রত্যাহার করে নিতে হবে, যাতে বড় ক্ষতি এড়ানো যায়। ভারতের মতো একটি বিকাশশীল রাষ্ট্রের সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং উপভোক্তাদের ক্ষুদ্র ক্রয়ক্ষমতার কথা বিবেচনা করে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলিকে বিদ্যুতের দাম এমন ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে যাতে বিদ্যুৎ পরিষেবা দরিদ্র জনসাধরাণের নাগালের বাইরে চলে না যায়।
পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির দৌড় নিয়ন্ত্রণে স্বার্থ এবং নীতিসমূহকে একত্র করা দরকের এবং প্রয়োজন সৃষ্টিধর্মী প্রকৌশল, যাতে অসরকারি ক্ষেত্রে সক্ষমতা তৈরি হয় এবং রাষ্ট্র-বাণিজ্য সম্পর্ক বেঁচে থাকে। যদি সাফল্য আসে, তা হলে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির উন্নয়ন এবং নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে অন্যান্য বিকাশশীল দেশের পথ প্রদর্শক হয়ে উঠতে পারে ভারত।
সূত্র : যোজনা, মে ২০১৪
সর্বশেষ সংশোধন করা : 7/13/2020