বায়ু-বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, বায়ু-বিদ্যুতের সঙ্গে সৌর/জৈবশক্তি হাইব্রিড সিস্টেমকে কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতের জন্য দূষণমুক্ত পৃথিবী গড়ে তুলতে পারি।
মানুষ তার নিজের প্রয়োজনে যথেচ্ছ ভাবে দেশের বন সম্পদ ধ্বংস করে চলেছে। ফলে সবুজ বনভূমি আজ প্রায় শেষ হতে বসেছে। অথচ আমরা বুঝতে পারছি না যে এই বন সংরক্ষণের উপর আমাদের ভবিষ্যৎ কতখানি নির্ভরশীল। প্রাকৃতিক ভারসাম্যের উপর নির্ভর করে, জ্বালানি কাঠের উপর নির্ভর না করে, অন্য কোনও বিকল্প জ্বালানির কথা ভাবার সময় এসেছে। অথচ কয়লা, কেরোসিন ইত্যাদি প্রথাগত জ্বালানি ক্রমশই দুর্মূল্য ও দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠেছে। তাই আজ বিশেষ ভাবে প্রয়োজন হয়ে পড়েছে এমন এক সহজপ্রাপ্য অপ্রচলিত জ্বালানির যা প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করবে না। এই সব কথা চিন্তা করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার জৈব গ্যাস প্রকল্প গ্রহণ করেছে।
জৈব গ্যাস একটি সহজ অপ্রচলিত বিকল্প শক্তি। গরু, মোষ, শুয়োর, মুরগি, মানুষের মল, শাকসবজির খোসা এবং অন্যান্য পরিত্যক্ত জৈব পদার্থ একটি বদ্ধ চৌবাচ্চায় অক্সিজেনের উপস্থিতিতে পচিয়ে তৈরি করা হয় জৈব গ্যাস। এই গ্যাসের একটি বড় অংশ মিথেন যা উন্নত মানের জ্বালানি। একটি পরিবারের জন্য প্রতি দিন অন্তত ৩০ কেজির মতো জৈব পদার্থ পাওয়া গেলে একটি ক্ষুদ্র আকারের জৈব গ্যাস প্লান্ট স্থাপন করা যায়। বাড়িতে ৩-৪টি গবাদি পশু থাকলেই সেই গোবর দিয়ে একটি প্লান্ট চালানো যেতে পারে।
সাধারণ ভাবে জৈব গ্যাস প্লান্টে থাকে একটি মিশ্রণ ঢালার চৌবাচ্চা। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মিস্ত্রিদের দিয়ে তৈরি করানোর পর জল ও গোবরের মিশ্রণ চৌবাচ্চায় ঢেলে পূর্ণ করতে হবে এবং কয়েক দিন অপেক্ষা করতে হবে। প্লান্টের মিশ্রণ থেকে উৎপন্ন গ্যাস ভিতরের চাপে বহির্গমন মুখ দিয়ে বের হওয়া শুরু হলে ওই গ্যাস ব্যবহার করা যাবে। এর পর প্রতি দিন নির্দিষ্ট পরিমাণ জৈব মিশ্রণ প্লান্টে ঢালতে হবে। উৎপন্ন জৈব গ্যাস পাইপলাইনের সাহায্যে রান্না ঘরে নিয়ে নির্দিষ্ট ধরনের বার্নারের মাধ্যমে রান্নার কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে।
সূত্র : পঞ্চায়েতি রাজ, জানুয়ারি ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/28/2020