সাধারণ ভাবে মানুষের মনে ধারণা রয়েছে যে সোলার সিস্টেম মানেই ভীষণ দামি, অনেক খরচের ব্যাপার। দ্বিতীয় ধারণা হল, সিস্টেমগুলি দ্রুত খারাপ হয়ে যায়। এগুলি মেরামত বা সারাই করার উপযুক্ত লোকজন হাতের কাছে পাওয়া যায় না।
সাম্প্রতিক সময়ে সোলার সিস্টেমের দাম অনেকটাই কমেছে। আর যে কোনও মানুষই তাঁর সাধ্যমতো সোলার সিস্টেম কিনতে পারেন। যেমন ২৫০-৩০০ টাকা খরচ করলে একটি সোলার টর্চ কেনা যায়। ওই টর্চ ব্যবহার করলে কিছু দিন পর পর ব্যাটারি পাল্টানোর ঝামেলা থাকে না। খরচ কমে, পরিবেশের পক্ষেও ভাল।
১৫০০-২০০০ টাকা খরচ করলেও একটি সোলার লন্ঠন কেনা যায়। সাধারণত এমার্জেন্সি রিচার্জেবল লাইটের পরিবর্তে সোলার লন্ঠনের আলো বেশি উজ্জ্বল। এমার্জেন্সি লাইট লাইন থেকে চার্জ করতে হয়। তার জন্য বিদ্যুৎ খরচ হয়। সোলার লন্ঠনের চার্জিং ফ্রি কারণ তা চার্জ হয় সূর্যের আলো থেকে। তাই এটি প্রতি দিনই ব্যবহার করা যায়। এ থেকে মোবাইলও চার্জ করা যায়।
৭,০০০-৮,০০০ টাকা খরচ করলে ২টি লাইট বা ১টি লাইট ও একটি ফ্যানযুক্ত সোলার হোম সিস্টেম কেনা যায়। সোলার মডিউলটি নিয়মিত পরিষ্কার করলে আর ব্যাটারিতে বছরে ৩/৪ বার ডিস্টিলড ওয়াটার দিলে এই সিস্টেম ৫/৬ বছর খুব ভালো কাজ করে। এই সিস্টেমের মডিউলের জন্য দশ বছর আর ব্যাটারির জন্য পাঁচ বছর ওয়ারান্টি থাকে। ব্যাটারিকে এক বার বুস্টার চার্জিং করলে ব্যাটারির আয়ু কিছুটা বাড়ানো যায়। এখন মানুষ রান্নাঘরে গ্যাসের পাশাপাশি ইন্ডাকশন কুকারেও রান্না করছেন। অর্থাৎ গ্যাস ফুরিয়ে গেলে ইন্ডাকশন কুকারেও কাজ চালানো যাবে। এই রকম বাড়িতেও দু’ রকমের বিদ্যুৎ সংযোগ থাকলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অন্য কোনও কারণে গ্রিড সরবরাহিত বিদ্যুৎ বন্ধ হলেও অসুবিধা হবে না।
প্রচলিত গ্রিড সংযুক্ত এলাকায় প্রতিষ্ঠানগুলি ৫ কিলোওয়াট বা তার বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যাটারিবিহীন গ্রিড সংযুক্ত সোলার সিস্টেম বসাতে পারেন। এই ব্যবস্থায় সোলার সিস্টেমে উৎপাদিত বিদ্যুৎ গ্রিডে পৌঁছে যাবে। আর প্রচলিত ব্যবস্থা থেকে যে বিদ্যুৎ ওই প্রতিষ্ঠান খরচ করবে, তার থেকে উৎপাদিত সৌর বিদ্যুতের বিয়োগফল, প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ খরচ বাবদ পেমেন্ট করতে হবে। এই ব্যবস্থাকে বলে নেট মিটারিং সিস্টেম। পশ্চিমবঙ্গে এখনও পর্যন্ত এটা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। ৫ কিলোওয়াটের কম ক্ষমতাসম্পন্ন পাওয়ার প্লান্ট বসিয়ে কোনও প্রতিষ্ঠান এই পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে সাশ্রয় করতে পারে।
সূত্র : পঞ্চায়েতি রাজ, জানুয়ারি ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/28/2020