ষাটের দশকের কথা। আমাদের তখন স্কুল জীবন। হ্যারিকেনের আলোতেই পড়াশোনা করতে হত। আর গরমকালে হাতপাখাই ছিল ভরসা। স্কুলেও আলো পাখার বালাই ছিল না। মাস্টারমশাইরা ঘর্মাক্ত কলেবরেই পড়াতেন। মাঝে মাঝে পাশে রাখা হাতপাখার হাওয়া খেয়ে শরীরটা কিছুটা ঠান্ডা করার চেষ্টা করতেন। আমাদেরও রাতে ঘুমনোর জন্য ঘরের ছাদে বা খোলা বারান্দায় আশ্রয় নিতে হত। পশ্চিমবঙ্গ তথা সারা দেশের সে সময়ের গ্রামজীবনের ছবিটা ছিল এ রকমই। বিদ্যুৎ ছিল কয়েকটি বড় শহরে এবং কতিপয় ছোট শহরে। ট্রেন চলত স্টিম ইঞ্জিনে। অবশ্য ধীরে ধীরে গড়ে ওঠা কলকারখানাগুলোতে বিদ্যুতের জোগানের ব্যবহার ছিল। আর বর্তমানে তো বিদ্যুৎ ছাড়া দিনের বেলাতেই অন্ধকার নেমে আসে, জীবন থমকে দাঁড়ায়।
আজকের দিনে যে কোনও দেশের অন্যতম পরিকাঠামো হল বিদ্যুৎ। ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার সময় দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল মাত্র ১৩৩০ মেগাওয়াট। ফলে দেশ স্বাধীন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য ক্ষেত্রের সঙ্গে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রটিকেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়, গড়ে তোলা হয় একের পর এক তাপবিদ্যুৎ এবং জলবিদ্যুৎ প্রকল্প। ১৯৯৫ সালের মার্চ মাসের শেষে দেখা যায় দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮১০০০ মেগাওয়াট এবং ২০১২ সালের জুন মাসের শেষে ২,০৫,৩৪০ মেগাওয়াট।
তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে মূল্যবান জ্বালানি পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। এই সব জ্বালানির মধ্যে অন্যতম জীবাশ্ম জ্বালানি, যেমন কয়লা। এ ছাড়াও রয়েছে প্রাকৃতিক গ্যাস, পরিশোধিত তেল এবং বিভিন্ন পেট্রোলজাত দ্রব্য, কৃষিক্ষেত্রের বর্জ্য, জৈব গ্যাস প্রভৃতি। বর্তমানে দেশের উৎপাদিত বিদ্যুতের সিংহভাগই হল তাপবিদ্যুৎ এবং এই তাপবিদ্যুতের বেশির ভাগটারই উৎপাদন আবার কয়লাভিত্তিক। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে কয়লা বা অন্য কোনও জ্বালানি পুড়িয়ে তাপ সৃষ্টি করা হয়, সেই তাপে জলকে স্টিমে পরিণত করা হয়, স্টিমের সাহায্যে ঘোরানো হয় টার্বাইন নামক একটি বিরাট চাকা। সেই ঘূর্ণায়মান চক্র থেকে উৎপন্ন শক্তিকে কাজে লাগিয়ে যে জেনারেটর চালানো হয়, সেই জেনারেটর থেকেই উৎপাদিত হয় বিদ্যুৎ। বিদ্যুৎ ট্রান্সমিশন লাইনের মাধ্যমে উপভোক্তাদের কাছে পাঠানো হয়।
সূত্র : যোজনা, মে ২০১৪
সর্বশেষ সংশোধন করা : 5/15/2020
কেন মানুষ ভুলে যায় তার কারণগুলো এখানে বলা হয়েছে।
কেন হয় এডস, কী করে বোঝা যায় ইত্যাদি প্রসঙ্গ এখানে ...
কেন হয় ডায়াবেটিস, কী করে বোঝা যায় ইত্যাদি প্রসঙ্গ ...
ভোটার তালিকায় কী ভাবে নাম তুলতে হয় তা এখানে বিশদে ...