জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হলে প্রকল্পের ক্ষতিকর প্রভাব আর থাকে না বললেই চলে। কারণ তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের মতো এই প্রকল্পগুলি থেকে ক্ষতিকর বর্জ্য নিক্ষিপ্ত হয় না এবং নিঃসরিত কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাসের পরিমাণও অপেক্ষাকৃত কম।
বড় বড় বিদ্যুৎ প্রকল্পের সঙ্গে ছোট জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের সংখ্যাও দেশে কম নয়। দেশে ছোট বিদ্যুৎ প্রকল্পে (২৫ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম) সংখ্যা ৬৭৪ এবং এই সব বিদ্যুৎ প্রকল্পের উৎপাদন ক্ষমতা ২৪২৯.৭৭ মেগাওয়াট। আরও ১৮৮টি ছোট বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। এবং ভবিষ্যতে এই সব প্রকল্প থেকে ৪৮৩.২৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। দেশে ছোট জলবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে তোলার ক্ষেত্রে হিমাচল প্রদেশ দৃষ্টান্তমূলক কাজ করে চলেছে। এদের রয়েছে পাঁচশোর বেশি ছোট জলবিদ্যুৎ প্রকল্প। এ ব্যাপারে রাজ্যের নীতিই হল ছোট জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলিকে আর্থিক অনুদান দিয়ে উৎসাহিত করা এবং ফলে বিভিন্ন কোম্পানি রাজ্যে ছোট জলবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে তুলতে এগিয়ে আসছে। প্রকল্প গড়ে তুলে এক দিকে যেমন তারা বিদ্যুতের সমস্যার সমাধান করছে, অন্য দিকে রাজ্যের আর্থিক বিকাশ ঘটাতে সক্ষম হয়েছে।
জলবিদ্যুৎ প্রকল্প হল পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি। কারণ কয়লা বা তেলের মতো এর উৎস নিঃশেষ হওয়ার নয়। ২০১০ সালে সারা পৃথিবীতে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ১৬ শতাংশ এসেছে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলি থেকে। পৃথিবীর ১৫০টি দেশে তৈরি হয় জলবিদ্যুৎ এবং এ ক্ষেত্রেও উৎপাদনের নিরিখে চিন সবাইকে টেক্কা দিয়েছে। চিনে অভ্যন্তরীণ চাহিদার ১৭ শতাংশ জলবিদ্যুৎ থেকে পূরণ করা হয়। তবে পৃথিবীর অনেক দেশই তাদের মোট চাহিদার ৮৫ শতাংশর বেশি জলবিদ্যুৎ থেকে মেটাতে সক্ষম হয়েছে। এই সব দেশের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নরওয়ে, কঙ্গো, প্যারাগুয়ে ও ব্রাজিল। আমেরিকায় রয়েছে ২০০০-র বেশি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প এবং তাদের মোট উৎপাদনের ৬.৪ শতাংশ তৈরি হয় এই সব প্রকল্পগুলি থেকে।
সূত্র : যোজনা, মে ২০১৪
সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/28/2020