মনে রাখতে হবে,অধিকাংশ জ্বালানি সংক্রান্ত মডেলের মতো মারকালের এনার্জি কেরিয়ারগুলিও শক্তি রূপান্তর ও তার ব্যবহারের মধ্যে একটি পারস্পরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। এর নেটওয়ার্কের মধ্যে খনিজ সম্পদ, পেট্রোলিয়াম উত্তোলন প্রভৃতির মতো প্রাথমিক সূত্রের এনার্জি কেরিয়ার, রূপান্তর ও প্রক্রিয়াকরণ (যেমন — বিদ্যুৎ কেন্দ্র, শোধনাগার প্রভৃতি) রয়েছে। শক্তির উন্নয়নের দিকে লক্ষ রেখে আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থা আইইএ (ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি) এনার্জি টেকনোলজি সিস্টেম অ্যানালিসিস প্রোগ্রাম — এসটাপ কর্মসূচির আওতায় এটি প্রস্তুত করেছে। মারকাল শক্তি ব্যবস্থার চাহিদা ও জোগান, দু’টি দিকের উপরই লক্ষ রাখে। নীতিনির্ধারক ও পরিকল্পনাকারীদের সামনে এই মডেল, শক্তির উৎপাদন ও ব্যবহারগত প্রযুক্তির প্রতিটি খুঁটিনাটি দিক তুলে ধরে।
টাইম সিরিজ ও ইকোনমেট্রিক্সের উপর ভিত্তি করে তৈরি মিশ্র মডেলের পূর্বাভাস অনুযায়ী, বিদ্যুতের চাহিদা বর্তমানের ৬৬ হাজার কোটি কিলোওয়াট থেকে বেড়ে ২০৪৫ সালে ৫ লক্ষ ৬ হাজার কোটি কিলোওয়াটে দাঁড়াবে। চাহিদা ও জোগানের মধ্যে বিপুল ফারাক (৭০ শতাংশ) দেখা দেওয়ার আশঙ্কা। হাতে যে পরিমাণ সম্পদ রয়েছে, তার সাহায্যে এই ফারাক ঘোচানো প্রায় অসম্ভব। এর একমাত্র সমাধান হল শক্তি সংরক্ষণ। শিল্প ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ,কৃষি ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ এবং গৃহস্থালি, বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে, পরিবহণ ও অন্যান্য ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ করে বিদ্যুৎ বাঁচানো সম্ভব। শক্তি সংরক্ষণ ব্যবস্থার পূর্ণ সদ্ব্যবহার করা হলে চাহিদা ও জোগানের ফারাক ৫০ শতাংশে অর্থাৎ ৩ লক্ষ ৮ হাজার কোটি কিলোওয়াটে নেমে আসবে। এই ৫০ শতাংশ ফারাকও পরমাণু, জল, বায়ু ও সৌরশক্তির সুদক্ষ ব্যবহারের মাধ্যমে মেটানো সম্ভব।
২০২০ সাল থেকে উন্নত পরমাণু প্রযুক্তির সুফল আমরা পাব। ২০৪০ সালের পর থেকে মোট বিদ্যুৎ চাহিদা কমতে শুরু করবে। কমবে কার্বন গ্যাস নির্গমণের হারও। আগামী ২৫ বছরে সৌর ও বায়ু শক্তির মাধ্যমে আরও বেশি করে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে।
প্রত্যন্ত এলাকায় এবং লোডশেডিং করতে হয় এমন জায়গাগুলিতে সৌরশক্তিচালিত পাম্প মাইক্রো গ্রিড নির্ভর পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির ব্যবহার, কৃষিক্ষেত্র ও গ্রামীণ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
সূত্র : যোজনা, মে ২০১৪
সর্বশেষ সংশোধন করা : 5/27/2020