ইকোনোমেট্রিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সম্পদের বণ্টন করলে তা যুক্তিসঙ্গত ও সর্বোত্তম হয় না। এ জন্য এমন কোনও মডেলের সাহায্য নেওয়া উচিত যেখানে ভবিষ্যৎ চাহিদার ইকোনমেট্রিক পূর্বাভাসকে উপাদান হিসাবে ধরা হয়। মারকাল এমনই একটি পদ্ধতি ও লিনিয়ার প্রোগ্রামিং মডেল। আন্তজার্তিক শক্তি সংস্থা আইইএ (ইন্টারন্যাশানাল এনার্জি এজেন্সি) এনার্জি টেকনোলজি সিস্টেম অ্যানালিসিস প্রোগ্রাম — এসটাপ কর্মসূচির আওতায় এটি প্রস্তুত করেছে। মারকাল শক্তি ব্যবস্থার চাহিদা ও জোগান, দু’টি দিকের উপরই লক্ষ্য রাখে। নীতিনির্ধারক ও পরিকল্পনাকারীদের সামনে এই মডেল, শক্তির উৎপাদন ও ব্যবহারগত প্রযুক্তির প্রতিটি খুঁটিনাটি দিক তুলে ধরে। ম্যাক্রো অর্থনীতি ও শক্তি ব্যবহারের পারস্পরিক সম্পর্ক বুঝতেও সাহায্য করে এটি। আন্তজার্তিক গবেষণা সংস্থাগুলির প্রযুক্তি সহায়তায় এই মডেল অনন্য হয়ে উঠেছে। এর ব্যবহার হয় ৪০টি দেশের ৮০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠানে। এর মধ্যে উন্নত, উন্নয়নশীল — সব রকম দেশই রয়েছে। অধিকাংশ জ্বালানি সংক্রান্ত মডেলের মতো মারকালের এনার্জি কেরিয়ারগুলিও শক্তি রূপান্তর ও তার ব্যবহারের মধ্যে একটি পারস্পরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। এর নেটওয়ার্কের মধ্যে খনিজ সম্পদ, পেট্রোলিয়াম উত্তলোন প্রভৃতির মতো প্রাথমিক সূত্রের এনার্জি কেরিয়ার, রূপান্তর ও প্রক্রিয়াকরণ (যেমন — বিদ্যুৎ কেন্দ্র, শোধনাগার প্রভৃতি) এবং শেষ ব্যবহারকারী (যেমন বয়লার, গাড়ি, গৃহস্থালি ইত্যাদি) সবই রয়েছে। বিদ্যুতের চাহিদাকে আমরা গৃহস্থালি, উৎপাদন, পরিবহন, বাণিজ্যিক প্রভৃতি বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভাগ করতে পারি। প্রতিটি ক্ষেত্রের মধ্যে আবার ব্যবহারের বহুবিধ উপক্ষেত্র রয়েছে। যেমন গৃহস্থালির জন্য বিদ্যুতের কিছুটা ব্যবহার করা হয় শীতাতপ যন্ত্রে, কিছুটা তাপ উৎপাদন করতে, কিছুটা আলোর জন্য, কিছুটা জল গরম করতে ইত্যাদি। এই মডেল অনুযায়ী প্রতিটি উৎসের এনার্জি কেরিয়ার ও রূপান্তর প্রযুক্তিকে চিহ্নিত করে সব থেকে কম খরচের সমাধানটি তুলে ধরা যায়। প্রযুক্তি ব্যয়, প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট (যেমন — রূপান্তরগত দক্ষতা) এব শক্তি পরিষেবার চাহিদাগুলি ব্যবহারকারী স্থির করেন। সংযুক্ত এই দৃষ্টিভঙ্গির ফলে জোগানের দিকের প্রযুক্তির সঙ্গে চাহিদার দিক মিলে যায়। কোন প্রযুক্তিকে বেস লোড টেকনোলজি হিসাবে ব্যবহার করা হবে তাও ব্যবহারকারী স্থির করে দেন।
সূত্র : যোজনা, মে ২০১৪
সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/28/2020