ভারতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ২০০৮-এর মার্চে ছিল ৭৬ গিগাওয়াট। ২০১৩-র মার্চে তা ৭১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ১৩০ গিগাওয়াট। সে সময়কালে উৎপাদনের উপযোগী কয়লা তোলার পরিমাণ বেড়েছে মাত্র ২০ শতাংশ। কয়লা আমদানি ২০১২-১৩-য় বৃদ্ধি পায় ৬.২৫ কোটি টনে। ২০০৭-৮-এ আমদানির পরিমাণ ছিল ১.২ কোটি টন মাত্র।
তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে চাহিদার তুলনায় দেশে উৎপাদিত কয়লার জোগান কম। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিদ্যুৎ সংস্থা এনটিপিসি বাধ্য হয়ে বেশি দাম দিয়ে কয়লা আমদানি করে। সংস্থাটি এখন নবীকরণযোগ্য উৎস থেকে শক্তি উৎপাদন করার দিকে মন দিয়েছে। তাদের তিনটি নতুন সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রে শীঘ্রই বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হওয়ার কথা। এই তিন কেন্দ্রে মোট উৎপাদন ক্ষমতা ৪৫ মেগাওয়াট।
গত দশক যাবৎ ভারতে অশোধিত তেল উৎপাদন থিতিয়ে পড়েছে। ওএনজিসি (মূলত বোম্বে হাই) এবং অসমে অয়েল ইন্ডিয়া লিমিটেডের খনিগুলি পুরনো। সেগুলিতে উৎপাদন কম ছাড়া বাড়ার আশা না করা ভালো। ভূতাত্ত্বিক দিক থেকে বেজুত অঞ্চলে তেলের খোঁজখবর দিতে চাই অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। পরিবেশে ড্রিলিং ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজকর্মের প্রভাবও খতিয়ে দেখা দরকার। ভারতে তেল আমদানি হয় মূলত পশ্চিম এশিয়া থেকে। ভূ-রাজনীতির দরুন ওই অঞ্চলে অশান্তি অস্থিরতা লেগেই আছে। যখন তখন আমদানি মুখ থুবড়ে পড়ার ভয়। এ ছাড়া জলদস্যুদের দাপট সহ সমুদ্রপথে নৌবাণিজ্যের নিরাপত্তার ইস্যুটি ভারতকে আচমকা আতান্তরে ফেলে দিতে পারে। আগের দশক থেকে দেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদা চড়ছে। এখন আমাদের প্রায় ১০ শতাংশ শক্তি আসে গ্যাস থেকে। ভারত ২০১২-১৩-য় ১৮০০ কোটি ঘনমিটার গ্যাস আমদানি করে। এ সত্ত্বেও পর্যাপ্ত গ্যাসের অভাবে মার খায় গ্যাসভিত্তিক ১০ গিগাওয়াট শক্তি উৎপাদন। ডি-৬ খনি থেকে গ্যাস উৎপাদনের পড়তি দশা। চাহিদা কিন্তু আকাশছোঁয়া। আন্তজার্তিক বাজারে দাম বাড়ছে হুহু করে।
গত পাঁচ বছরে কয়লা আমদানি বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। কিন্তু দেশীয় কয়লার সঙ্গে মিশিয়ে তা ব্যবহারের ক্ষেত্রে যথেষ্ট প্রযুক্তিগত উন্নয়ন হয়নি। বিদেশি কয়লাকে জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করতে গেলে এদিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন।
সূত্র : যোজনা, মে ২০১৪
সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/28/2020