দ্য এনার্জি অ্যান্ড রিসোর্সেস ইনিস্টিটিউট তথা টেরি-র হিসাব মতো ২০০১-এর তুলনায় ২০৩১-এ বাণিজ্যিক শক্তির চাহিদা বাড়বে ৬ গুণ। ২০৫১-য় তা দাঁড়াবে ১২ গুণ। এই হিসেব অবশ্য রেফারেন্স এনার্জি সিনারিওর ভিত্তিতে। এ ক্ষেত্রে ধরা হয় যে চলতি পরিকল্পনা ও নীতি বহাল থেকে যাবে। এনার্জি সিকিওরিটি সিনারিওতে অবশ্য নবীকরণযোগ্য এবং বিকল্প শক্তির অংশ ক্রমশ বৃদ্ধির কথা বিবেচনা করা হয়। এর হিসেবে চাহিদা অতটা বাড়বে না। ২০৩১-এ চাহিদা বাড়বে ৫ গুণ। আর ২০৫১-য় ৯ গুণ। নবীকরণযোগ্য ও বিকল্প শক্তিতে জোর দেওয়ার জন্য বেশ কিছু নীতিগত পদক্ষেপের দরুন ইএসএস অনুযায়ী ২০৩১-এ মোট চাহিদার ৭ শতাংশ মেটাতে শক্তির এই উৎস। আরইএফ অনুযায়ী যা কিনা ৪ শতাংশ।
এক সময় দেশে শক্তি উৎপাদনে একটা বড় অংশ ছিল নবীকরণযোগ্য উৎসের (মূলত জলবিদ্যুৎ)। শক্তির ব্যবহার দ্রুত বেড়ে চলায় ভারত ক্রমশ জীবাশ্মভিত্তিক শক্তি তেল-কয়লা উৎপাদনের দিকে বেশি ঝুঁকেছে। চাহিদা জোগানের ফারাকের দিক থেকে দেখলে ২০০৩-৪-এ মোট জোগানের ৩৬ শতাংশ আসত আমদানি থেকে। ২০০৯-১০-এ তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৯ শতাংশে। হিসেবনিকেশ থেকে স্পষ্ট দেশে জ্বালানি উৎপাদন বৃদ্ধি ও নবীকরণযোগ্য উৎস আরও বেশি কাজে লাগানোর চেষ্টা সত্ত্বেও আমদানি বেড়েই চলবে। আরইএফ-এর ইঙ্গিত ২০৩১-এ আমদানির উপর নির্ভরতা বেড়ে দাঁড়াবে ৭৪ শতাংশে। ২৯৫১-এ ৮৭ শতাংশ। ইএসএস অনুযায়ী তা অবশ্য যথাক্রমে ৫৪ শতাংশ এবং ৭২ শতাংশ। এ থেকে স্পষ্ট এমনকী ইএসএসের হিসেবেও জ্বালানি আমদানি বাবদ ব্যয়, আমদানি করা তেল-কয়লা খালাস ও পরিবহনের জন্য পর্যাপ্ত পরিকাঠামো এবং পরিবেশ নিয়ে দুশ্চিন্তার হাত থেকে রেহাই নেই। তেলের ক্ষেত্রে বিকল্পের অভাবে আমদানির উপর নির্ভরতা কমানোর সম্ভাবনা ক্ষীণ। আর আরইএফ এবং ইএসএসের হিসেবে কয়লা আমদানির উপর মুখাপেক্ষিতা ২০৩১-এ যথাক্রমে ৫২ শতাংশ ও ২১ শতাংশ। তাই এ ক্ষেত্রে অন্যান্য বিকল্পের দিকে ঝোঁকা যেতে পারে।
ভবিষ্যতে দেশের মধ্যে প্রচলিত জ্বালানি মেলার পরিমাণ ও বিকল্প শক্তির উৎপাদন বাড়ানোর সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার পর নিরাপত্তার ক্ষেত্রে তেমন একটা ভরসা কোথায়। বেশি কিছু বিষয়ে নাছোড়বান্দা উদ্যোগ চালালে অবশ্য অন্য কথা।
সূত্র : যোজনা, মে ২০১৪
সর্বশেষ সংশোধন করা : 7/11/2020