বিভিন্ন দফায় সরকারি ক্ষেত্রের সংস্থাগুলির সঙ্গে একযোগে কাজও করে বেসরকারি সংস্থাগুলি। তবে চুক্তি সম্পাদনের পক্ষে উপযুক্ত বেশ কিছু প্রশাসনিক, পরিচালনগত পরিবর্তন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিতে আনা দরকার বলে হাইড্রোকার্বন মহানির্দেশলায়ের পক্ষ থেকে মনে করা হয়। কারণ চুক্তি রূপায়ণের দায়িত্ব এই সরকারি দফতরেরই। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রক ড. বিজয় কেলকারের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে দেশে তেল ও গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে আমদানির উপর নির্ভরতা ক্রমাগত কমিয়ে আনার দিক নির্দেশ করার লক্ষ্যে।
বিদেশে শক্তি সম্পদ বাড়িয়ে তোলার বিষয়টিকেও কেন্দ্রীয় সরকার উৎসাহ দিয়ে এসেছে। কারণ এই ধরনের অধিগ্রহণ ভবিষ্যতে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে চাহিদা মেটানোর কাজে বিশেষ সহায়ক হয়ে উঠতে পারে। তাতে দেশের অর্থনৈতিক পরিবেশ প্রতিকূল হয়ে ওঠার আশঙ্কাও হ্রাস পাবে। সড়ক পরিবহণকে একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে তার উপর মানুষের নির্ভরতা কমাতে এবং পেট্রোলিয়ামজাত জ্বালানির উপর পরিবহণের নির্ভরশীলতা কমাতে রেল ও জলপথে পরিবহণ ব্যবস্থার প্রসার জরুরি ঠিক কথা, কিন্তু সেই সঙ্গে জৈব জ্বালানি, বিদ্যুৎ এবং হাইড্রোজেনের মতো বিকল্প জ্বালানি অনুসন্ধানের উপর বিশেষ জোর দিতে হবে। আর এ সমস্তর জন্য প্রয়োজন সম্মিলিত নীতিগত প্রচেষ্টা। ভারত সরকারের এমনই কয়েকটি নীতি হল — জাতীয় হাইড্রোজেন জ্বালানি রোড ম্যাপ(২০০৬), জাতীয় জৈব জ্বালানি সংক্রান্ত নীতি (২০০৯), ন্যাশনাল ইলেকট্রিক মোবিলিটি মিশন প্ল্যান ২০২০ (২০১২)। যদি উপযুক্ত সহায় সম্পদের জোগান নিশ্চিত করা যায় এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত কৃৎকৌশল উদ্ভাবন করা যায়, তা হলে এই সমস্ত বিকল্প জ্বালানির ব্যবহার নীতি রচনার কাজে এবং অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে বিশেষ প্রাধান্য পাবে।
গ্রিডভিত্তিক, গ্রিডনিরপেক্ষ এবং বিকেন্দ্রীকৃত পুনর্ব্যবহারযোগ্য প্রযুক্তির সম্ভাবনা প্রচুর। যদিও এ পর্যন্ত তা নিয়ে তেমন অনুসন্ধান বা কাজে লাগানোর চেষ্টা হয়নি। দ্বাদশ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় (২০১২-১৭) পুনর্ব্যবহার্য জ্বালানি প্রযুক্তিতে বিনিয়োগের বিষয়টিকে উৎসাহিত করতে কেন্দ্রীয় নতুন ও পুননর্বীকরণযোগ্য শক্তি মন্ত্রক বিশেষ নীতিগত পদক্ষেপ নেবে। ভারত যদি সুষম বিকাশের পথ প্রশস্ত করতে চায় এবং আধুনিক জ্বালানির সুযোগ গ্রহণ করতে চায় তা হলে এই ধরনের প্রযুক্তির আশ্রয় গ্রহণ করাটা খুবই তাৎপর্যের।
সূত্র : যোজনা, মে ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/14/2019