২০১২ সালের ভাষণে বারাক ওবামা স্পষ্ট করে বলেছিলেন, ‘আপনারা জানেন শক্তি নিরাপত্তার চটজলদি সমাধানের কোনও ব্যাপার নেই। আপনারা এও জানেন যে জ্বালানির দাম কমাতে হঠাৎ কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়। শক্তি ক্ষেত্রকে ভবিষ্যতে যদি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয় এবং সেই সঙ্গে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি এড়াতে হয় তা হলে আমাদের, তেল, গ্যাস, বাতাস, সৌর, পরমাণু, জৈব জ্বালানি ও অন্যান্য শক্তির উৎসকে নিয়ে একটি দীর্ঘমেয়াদি সার্বিক রণকৌশল তৈরি করতে হবে। তেলের ও গ্যাসের উপর নির্ভরতা কমানোর জন্য আরও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি আবিষ্কার করতে হবে। এই রণকৌশল নিয়েই আমরা এগোচ্ছি এবং একমাত্র সেটাই আমাদের সমস্যার সমাধান’।
বিকল্প শক্তির উৎসের সন্ধান অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি পরিবেশের উপর তেমন প্রভাব ফেলে না। পরমাণু শক্তি (ফিশন) থেকে গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণ এবং স্বাস্থ্যের ক্ষতি যতটা ঘটে তা কয়লা, তেল গ্যাসের তুলনায় কম। তবে পরমাণু শক্তি ব্যবহারের একটি অন্য বিপদ রয়েছে। ১৯৭৯ সালে থ্রি মাইল আইল্যান্ড দুর্ঘটনা এবং ১৯৮৬-র চেরোনোবিল বিপর্যয়ের পাশাপাশি বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়তে বিশাল খরচের দরুন বিশ্ব জুড়ে পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদন যতটা দ্রুত বৃদ্ধি হওয়ার কথা ছিল ততটা হয়নি।
২০১১-য় জাপানের সুনামির ফলে ফুকুশিমা পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বিপজ্জনক ভাবে ছড়িয়ে পড়ে রেডিওঅ্যাকটিভ কণা। সেখানে হাইড্রোজেন গ্যাস বিস্ফোরণ হয়েছিল। যার আংশিক গলন মাত্রা ছিল ৭। বেশি মাত্রায় রেডিওঅ্যাকটিভ কণা নির্গমণের ফলে বিদ্যুৎকেন্দ্র ঘিরে ২০ কিলোমিটার এলাকায় মানুষকে সরাতে হয়। চেরোনোবিলেও একই ভাবে বৃত্ত এলাকা থেকে মানুষজনকে সরানো হয়। ওই নিষেধাজ্ঞা এখনও বলবৎ আছে। অনেক ইউরোপীয় দেশ যেমন, জার্মানিতে নাগরিক আন্দোলনে পরমাণু বিদ্যুতের বিরুদ্ধ মতবাদ প্রাধান্য পেয়েছে।
সূত্র : যোজনা, মে ২০১৪
সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/4/2020