শক্তির বিভিন্ন উৎস, তার ব্যবহার এবং সম্ভাবনা ও সঙ্কট নিয়ে চিন্তাভাবনা এখন সারা বিশ্ব জুড়ে। পাশাপাশি কী ভাবে অপেক্ষাকৃত কম শক্তি ব্যবহার করে এবং প্রকৃতির উপর নির্ভরতা বাড়িয়ে আমাদের দৈনন্দিন প্রয়োজন মিটিয়ে ফেলা সম্ভব, সেই জীবনশৈলীর অনুশীলনও কিন্তু শক্তি সংরক্ষণের ক্ষেত্রে সমান জরুরি। বিশ্ব জুড়ে শুরু হওয়া সেই সব চিন্তাভাবনা আমাদের নিজেদের দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োগ করতে পারলে নিজেদের শক্তি সংক্রান্ত খরচ তো কমবেই, সঙ্গে সঙ্গে দূষণমুক্ত পৃথিবী এবং জাতীয় শক্তি সংরক্ষণ উদ্যোগের শরিক হওয়ার কৃতিত্ব লাভ করাও সম্ভব। দেখে নেওয়া যাক, কী কী পদ্ধতিতে শক্তি সংরক্ষণ করা যেতে পারে। কিন্তু শক্তি সংরক্ষণ তথা শক্তি নিরাপত্তার জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন ভারতের শক্তিচিত্র, তার উৎস, ব্যবহার, সঙ্কট এবং প্রকৃতির উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জনসচেতনা সৃষ্টি করা। সাধারণ মানুষের সক্রিয় সহযোগিতা এবং অংশগ্রহণ ছাড়া ভারতে সুসংহত শক্তিনীতি রূপায়ণ সম্ভব নয়। প্রাকৃতিক গ্যাস, বিদ্যুৎ এবং খনিজ তেলের দামে ব্যাপক ছাড় এবং লাগামহীন ভর্তুকির জনমোহিনী ক্ষমতা হয়তো আছে, কিন্তু তার ফলে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহারকেই উৎসাহ দিয়ে নিজেদের মাথায় সর্বনাশা ধ্বংসের হাত রাখাটা কতটা যুক্তিযুক্ত হবে তা ভেবে দেখার সময় এসেছে। মনে রাখা উচিত, বিকল্প শক্তির পরিকল্পনা, তার প্রত্যকেটির সরবরাহ আগামী দিনে ভীষণ ভাবেই অনিশ্চিত। উপরন্তু প্রচলিত শক্তির উৎসগুলির ব্যাপক ব্যবহারের ফলে প্রকৃতির উপর এমন বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়ে চলেছে যে, বিশ্ব উষ্ণায়ন, সমুদ্রের জলতল বৃদ্ধি এবং বায়ুমণ্ডলের দূষেণর ফলে সমগ্র জীবজগতের অস্তিত্ব বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সূত্র : যোজনা, মে ২০১৪
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/26/2020