শীত ও গ্রীষ্মকালে প্রচুর সূর্যালোক থাকলেও বর্ষাকালে তা কম পাওয়া যায়। আবার তখন অন্যান্য সময়ের তুলনায় হাওয়ার জোর বেশি থাকে। তাই শীত-গ্রীষ্মে সৌরবিদ্যুৎ এবং বর্ষায় হাওয়া কলের সাহায্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারলে সারা বছর নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাওয়া সম্ভব। এর ফলে বাড়িতে বিদ্যুৎ খরচ যেমন কমবে, তেমনই গ্রিড কানেক্টটেড বিদ্যুতের মুখাপেক্ষী থাকার দরকার হবে না। তবে এই ধরনের উদ্যোগে সরকারি সাহায্য, উৎসাহ এবং কোনও কোনও ক্ষেত্রে কঠোর আইনি ব্যবস্থা অত্যন্ত জরুরি। সৌরশক্তি ব্যবহারে উৎসাহ দিতে তামিলনাড়ু সরকার সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহারকারীদের কর ছাড় এবং বিদ্যুতের বিলে ইউনিট প্রতি এক টাকা রিবেট দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। গুজরাত সরকার গ্রহণ করেছে রুফ-টপ সোলার পাওয়ার জেনারেশন স্কিম।
সৌরশক্তির পরেই ভারতে সব চেয়ে সম্ভাবনাময় পুনর্নবীকরণযোগ্য অচিরাচরিত শক্তি হল বায়ুশক্তি। এই শক্তি উৎপাদনের সব চেয়ে বড় সুবিধা হল, হাওয়াকল খুব কম সময়ে এবং স্বল্প ব্যয়ে স্থাপন করা সম্ভব। তা ছাড়া এই শক্তির ব্যবহার পুরোপুরি দূষণমুক্ত। রক্ষণাবেক্ষণের খরচও নামমাত্র। ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসের হিসাব অনুযায়ী ভারতে বায়ুচালিত বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বছরে ১৮,৬০৪.৯ মেগাওয়াট। এই বিদ্যুতের সিংহভাগ উৎপন্ন হয় তামিলনাড়ু, গুজরাত, কর্ণাটক এবং রাজস্থানে। অন্যান্য রাজ্যেও বিস্তীর্ণ বেলাভূমিতে এই বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। শুধু প্রয়োজন রাষ্ট্রীয় প্রকল্প রচনা ও তা প্রণয়নের সদিচ্ছা।
মূলত জৈব বর্জ্য থেকে প্রাকৃতিক উপায়ে কিংবা কৃত্রিম ভাবে উৎপন্ন গ্যাস দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করার সম্ভাবনা আমাদের দেশে প্রবল। গ্রামাঞ্চলে অনেক জায়গাতেই গোবর গ্যাস প্লান্টের মাধ্যমে রান্নাবান্না থেকে আলো জ্বালানো আমাদের দেশে নতুন নয়। কিন্তু ভারতের বিস্তীর্ণ বনভূমির উপজাত সামগ্রী, কাঠ, পাতা, কৃষি উপজাত সামগ্রী, যেমন খড়, তুষ, আখের ছিবড়ে, পশুপালন উপজাত গোবর প্রভৃতি ব্যবহার করে জৈব গ্যাস উৎপাদন করা হয় এবং এ দেশে অচিরাচরিত শক্তির একটা বড় অংশ আসে এই বায়োমাস থেকে।
সূত্র : যোজনা, মে ২০১৪
সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/28/2020