ভারত সরকার সুসংহত শক্তি নীতি নির্ধারণ করার জন্য ২০০৪ সালে একটি কমিটি গঠন করেন। এই কমিটি ২০০৬ সালে একটি খসড়া প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ২০০৮ সালে ওই কমিটির সুপারিশ জাতীয় সুসংহত শক্তি নীতি হিসাবে গৃহীত হয়। এই শক্তি নীতিতে তিনটি বিষয়ের উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়। এগুলি হল —
এই নীতির অন্তর্নিহিত বার্তাটি হল শক্তির সংরক্ষণের পাশাপাশি বিকল্প শক্তির উপর নির্ভরতা বাড়িয়ে শক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং শক্তি দক্ষতা বাড়িয়ে অপেক্ষাকৃত কম বা পরিমিত শক্তি ব্যবহার করেই আমাদের যাবতীয় প্রয়োজন মিটিয়ে ফেলা। বিষয়টি অবশ্য এত সরল নয়। বরং বলা যায়, শক্তি সংরক্ষণ হল পরস্পর-নির্ভর এমন একটা জটিল কর্মসূচি, যার জন্য চিরাচরিত শক্তির ব্যবহার হ্রাস, অচিরাচরিত শক্তির উৎসগুলিকে কাজে লাগানো এবং শক্তি দক্ষতাবৃদ্ধি একযোগে প্রয়োজন। আর শক্তি নিরাপত্তা? ভারতের ক্ষেত্রে পুরোটাই চাহিদা এবং সরবরাহের ভারসাম্যের উপর নির্ভরশীল। আরও নির্দিষ্ট করে বললে, সরবরাহ নির্ভর করে আমদানির উপর। কারণ শুধুমাত্র অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ভারতের শক্তি চাহিদার তুলনায় যথেষ্ট কম।
ভারতের সুসংহত শক্তি নীতিতে তাই বাজার অর্থনীতির প্রভাব সুস্পষ্ট। এই নীতিতে সর্ব প্রথম অসরকারি বাণিজ্যিক সংস্থাকে সরকারি বা সরকার অধিকৃত সংস্থাগুলির সঙ্গে প্রতিযোগিতার দরজা খুলে দেওয়া হল। শক্তি ক্ষেত্রে ভর্তুকি এবং মূল্য নির্ধারণের মতো স্পর্শকাতর বিষয়গুলিতে স্বচ্ছতা এনে একযোগে বিনিয়োগকারী এবং উপভোক্তাকে স্পষ্ট বার্তা দেওয়ার প্রয়াস থাকলেও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সুবিধাবাদের প্রভাব থেকে পুরোপুরি মুক্তির রক্ষাকবচ এই নীতিতে অনুপস্থিত।
সূত্র : যোজনা, মে ২০১৪
সর্বশেষ সংশোধন করা : 2/14/2020