ভারতের মতো ক্রান্তীয় দেশে পর্যাপ্ত সূর্যালোক যথাযথ ভাবে ব্যবহার করতে পারলে ভারতে শক্তি সমস্যা অনেকটা লাঘব করা সম্ভব। ২০১৩ সালের মার্চ মাসের হিসাব অনুযায়ী, এ দেশে ১৬৮৬.৪৪ মোগাওয়াট গ্রিড কানেক্টেড পিভি স্থাপিত হয়েছে। বছরে ৬৫৪.৮ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করে অবদান তালিকার শীর্ষে গুজরাত। আর যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও মাত্র ২ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করে পশ্চিমবঙ্গ সবার পিছনে। যা-ই হোক, ভারতে যে বিপুল পরিমাণ সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে, বিজ্ঞানী থেকে সৌরবিদ্যুৎ বিশেষজ্ঞ — সকলেই এ ব্যাপারে সহমত পোষণ করেন। ভারতে বছরে গড়ে তিনশোটি সূর্যকরোজ্জ্বল দিন অর্থাৎ ১৫০০ থেকে ২০০০ সৌরঘণ্টা পাওয়া সম্ভব। ভারতে সূর্যালোকিত ভূমির ক্ষেত্রফল বিবেচনা করলে বছরে ৫ হাজার পেটাওয়াট ঘণ্টা বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। ১০ শতাংশ দক্ষতাসম্পন্ন পিভি ব্যবহার করেও যে পরিমাণ সৌরবিদ্যুৎ পেতে পারি তা ভারতের মোট বিদ্যুৎ চাহিদার চাইতে অনেক বেশি। ২০০৯ সালের ১৮ নভেম্বর ন্যাশনাল সোলার মিশন-এর মাধ্যমে ২০১৩ সালের মধ্যে ১০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের যে লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছিল এক বছর আগেই অর্থাৎ ২০১১ সালের জুলাই মাসেই তা পূর্ণ হয়েছে।
২০১১ সালে ইন্টারন্যাশানাল এনার্জি এজেন্সি সৌরশক্তি প্রযুক্তির বিকাশ ও প্রয়োগের মাধ্যমে এ দেশে পরিচ্ছন্ন অর্থাৎ দূষণহীন এবং অপেক্ষাকৃত সস্তায় দীর্ঘমেয়াদি বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব বলে অভিমত ব্যক্ত করেছে। তারা আরও মনে করে যে, এর ফলে অশেষ ও নিরবচ্ছিন্ন শক্তি সরবরাহের দরজা উন্মুক্ত হবে, যা প্রকারান্তরে দেশের শক্তি নিরাপত্তা মজবুত করার সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশ দূষণ এবং জলবায়ুর পরিবর্তনের আশঙ্কা রোধ করবে। ব্যবহার করা যেতে পারে হাইব্রিড মডেল ও একই সঙ্গে সোলার প্যানেল ও হাওয়া কলের সহাবস্থান।
সূত্র : যোজনা, মে ২০১৪
সর্বশেষ সংশোধন করা : 12/18/2019