উত্তর হল, না। কিন্তু বৈজ্ঞানিকদের ধারণা পৃথিবীতে যে হেতু কয়লা এই শতাব্দীর শেষ পর্যন্ত থাকবে এর ব্যবহার, দাম, উত্তোলন পদ্ধতি ও কয়লার গুণগত মানে ঘটবে বিরাট পরিবর্তন। আমাদের দেশে এক হাজার কেজি কয়লার দাম আটের দশকে ছিল ২৫০ টাকা। আর আজ তিরিশ বছর বাদে সেই একই পরিমাণ কয়লার দাম হয়েছে পাঁচ হাজার টাকা। তা-ও কয়লার গুণগত মান ভাল নয়। ফলে এখন আমাদের উত্তম মানের কয়লা বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। উত্তম মানের কয়লা বলতে আমরা বুঝি যে কয়লা কেজি প্রতি বেশি তাপশক্তি বহন করে ও যার মধ্যে অন্যান্য অশুদ্ধতা কম থাকে। পৃথিবীর এখন ভীষণ এক বিপদ হল জলবায়ু পরিবর্তন। জলবায়ু পরিবর্তনে কয়লা-নির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্রের অবদানই সর্বাধিক। পরিবেশবিদদের দাবি, সারা পৃথিবী থেকে কয়লার ব্যবহার কমিয়ে আনা হোক। গত কুড়ি বছরে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ অনেকগুলি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছে। এ রকম একটি পরিস্থিতিতে শক্তির উৎস হিসাবে পৃথিবীতে কয়লার ব্যবহার হয়তো এই শতাব্দীর শেষ ভাগে আর থাকবে না। মনে রাখা দরকার কয়লাভিত্তিক উন্নয়ন স্থায়ী নয়। কয়লার কথা খানিকটা বললাম। এ বার আসা যাক তেলের গল্পে। তেল বলতে আমি পেট্রোল, ডিজেল এগুলির কথা বলছি। একে আমরা জ্বালানি তেল বলে থাকি। আজ পৃথিবীতে যে তেল কোটি কোটি লিটার জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার হয়। এই তেলের ব্যবহার শুরু হয়েছিল ১৮৫০ সাল নাগাদ। তেলের সৃষ্টির ইতিহাস কিন্তু অনেক পুরনো দিনের গল্প। তেল তৈরি হয় গাছ বা অন্যান্য জন্তুর জীবাশ্ম থেকে। জীবাশ্ম থেকে তেল তৈরি হতে কিন্তু অনেক অনেক বছর লেগেছে। এই সব জীবজন্তু বা বৃক্ষের মৃত্যু হয় কিন্তু ২০০ মিলিয়ন বছর আগে (১মিলিয়ন অর্থাৎ ১০লক্ষ)। সেই সময় এই সব জীবজন্তুর মৃতদেহ সমুদ্র বা বড় জলাশয়ে নিমজ্জিত হয় এবং মাটি চাপা পড়ে এই সব জীবজন্তুর দেহের অংশ বিশেষ পাথরের মতো শক্ত হয়। প্রাগৈতিহাসিক যুগের এই সব জীবজন্তু এবং উদ্ভিদের অংশ বিশেষ থেকে তেল তৈরি হওয়ার জন্য প্রয়োজন কিছু তাপশক্তি। লক্ষ লক্ষ বছরে পৃথিবীর অভ্যন্তরে স্বল্প গরমে এই সব জীবাশ্ম পরিণত হয় তেল নামক তরল পদার্থে।
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/25/2020