হাজার হাজার বছর আগেও কিন্তু পৃথিবীতে আমরা তেল ব্যবহার করতাম। মূলত মিশর ও চিন দেশে সে সময় তেলের ব্যবহার হত চিকিৎসার কাজে। সেটা ছিল মাটি থেকে উপচে পড়া তেল। চিন দেশেই প্রথমে মাটিতে ছিদ্র করে পাইপের সাহায্যে ভূগর্ভস্থ তেল বের করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সেই যন্ত্রের সাহায্যে ভূগর্ভের বেশি নীচে যাওয়া যায়নি। সঠিক কারিগরি ভাবে ড্রিলিং যন্ত্রের সাহায্যে প্রথম তেল উত্তোলন করেন ফায়দোর সিমিয়োনত নামে এক প্রযুক্তিবিদ। সেটা ছিল ১৮৪৬ সাল। অধুনা আজারবাইজানের বাকু শহরের কাছে এই ড্রিলিং যন্ত্রটি বসানো হয়েছিল। প্রথম তেল উত্তোলনের ড্রিল মেশিনটির নীচে প্রায় ৯০ ফুট পর্যন্ত ছিদ্র করে তেল বের করা হয়েছিল। পরবর্তী কালে ১৮৫৮-য় উত্তর আমেরিকায় আরও বড় তেল কূপ খনন করা হয়। প্রথম দিকে তেলের ব্যবহার হতো শুধুমাত্র বাতি জ্বালানোর কাজে। কিন্তু পরবর্তী কালে গাড়ি, জাহাজ বা অন্য কোনও ইঞ্জিন চালানোর জন্য তেলের ব্যবহার শুরু হল। ধীরে ধীরে তেল একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানিতে পরিণত হল। তিমি মাছের তেল বা রেড়ির তেলের ব্যবহার কমে গেল। প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীর কোথায় তেল আছে তা আয়ত্তে এনে পৃথিবীতে তেল তোলার ব্যপক খননকার্য শুরু হল।
পৃথিবীতে যে সব দেশে সবচেয়ে বেশি তেল পাওয়া যায় সেগুলি হল, সৌদি আরব, ইরান, ইরাক, নাইজেরিয়া, ভেনেজুয়েলা, রাশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী ও কানাডা। এই সব দেশগুলিতে অজস্র তেলের খনি আছে। মনে রাখতে হবে মাটি খনন করে আমরা যে কালো তেল পাই সেটা ক্রুড তেল তথা অপরিশোধিত তেল। সেটা সরাসরি ব্যবহার করা যায় না। এর মধ্যে নানা উপসামগ্রী আছে যেগুলি বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়। এই অপরিশোধিত তেলকে শোধনাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। এই তেল পাইপ লাইনের সাহায্যে অথবা জাহাজে করে তৈল শোধনাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
অপরিশোধিত তেল থেকে কী কী জিনিস তৈরি হয়
প্রায় ৫০ শতাংশ পেট্রোল
প্রায় ১৮ শতাংশ ডিজেল
প্রায় ১২ শতাংশ ডিজেলের জ্বালানি
বাকি ২০ শতাংশ থেকে রাস্তার নির্মাণ সামগ্রী, প্লাস্টিক, লুব্রিক্যান্ট, চলতি ভাষায় যাকে মোবিল বলা হয়, তৈরি হয়।
সর্বশেষ সংশোধন করা : 5/31/2020