সারা পৃথিবীর সমস্ত দেশের বিদ্যুৎ খরচের নিরিখে ভারত আছে চতুর্থ স্থানে। প্রথম দু’টি দেশ চিন ও আমেরিকা আর তৃতীয় স্থানে রাশিয়া। অথচ জনপ্রতি বিদ্যুৎ খরচের হিসাবে আমরা অনেক পিছিয়ে, সংখ্যাটা প্রায় ৯০০ কিলোওয়াট আওয়ার। অর্থাৎ জনপ্রতি আমাদের বছরে ৯০০ ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে হয়।এই সংখ্যা যে হারে বেড়ে চলেছে তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলার জন্যই আজ আমরা শক্তি খরচ নিয়ে চিন্তিত। আমাদের দেশের সুসংহত শক্তি নীতির হিসেব অনুযায়ী ২০৩১-৩২ সালে আমাদের চাহিদা মেটাতে গেলে উৎপাদন বাড়াতে হবে প্রতি বছরে ৫.৮ শতাংশ হারে। অর্থাৎ হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে উৎপাদনকেন্দ্রের সংখ্যাও বাড়িয়ে চলতে হবে। কারণ দেশের মানুষের ঘরে ঘরে, তাদের সামর্থ্যঅনুযায়ী নিরবচ্ছিন্ন ভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে না পারলে শক্তি নিরাপত্তার কোনও অর্থই হয় না।
এ ছাড়া কয়লা উৎপাদন প্রতি বছর ৫ থেকে ৬ শতাংশ হারে বাড়াতে হচ্ছে। তা সত্ত্বেও বিগত কয়েক বছরে বিদেশ থেকে কয়লা আমদানির পরিমাণও বহু গুণ বেড়ে গিয়েছে। কারণ চাহিদা বাড়ছে ৮-৯ শতাংশ হারে। কোল কন্ট্রোলার অর্গানাইজেশনের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, ২০১২-১৩ আর্থিক বছরে যেখানে আনুমানিক কয়লা উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৫৭৫ মিলিয়ন টন, সেই পরিমাণ ২০১৬-১৭ তো দাঁড়াবে ৭১৫ মিলিয়ন টন। তা সত্ত্বেও গত পাঁচ বছরে আমদানি করা কয়লার পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রধানত ইন্দোনেশিয়া ও অষ্ট্রেলিয়া থেকে এই কয়লা আসছে এবং বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন সংস্থাগুলি এখন চেষ্টা চালাচ্ছে বিদেশে কয়লার খনি কিনে ফেলার। তাতে কয়লার ওজন, মান এবং অন্য গুণাগুণ অনেকটাই নিজেদের হাতে থাকবে।
অদূর ভবিষ্যতে সমগ্র মানবজাতিকেই অচিরাচরিত শক্তির দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে, যদি না তারা পারমাণবিক শক্তির সঙ্গে হাত মেলায়। সৌর ও বায়ুশক্তি ছাড়া আর একটি অচিরাচরিত শক্তির উৎসের সন্ধান পাওয়া গেছে, যার নাম শেল গ্যাস। এটি প্রাকৃতিক গ্যাস ছাড়া কিছুই নয়।
সূত্র : যোজনা, মে ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 3/4/2020