শক্তি সংরক্ষণ বা এনার্জি কনজার্ভেশন সম্বন্ধে আমরা এতকাল উদাসীন ছিলাম। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সচেতনতা বেড়েছে এবং সরকারি ও বেসরকারি দুই মহলেই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এটি মূলত ব্যবহারকারী বা বিদ্যুৎ গ্রাহকের দায় —গ্রাহকরাও বুঝেছেন যে এটি একটি উইন উইন বা ‘তোমারও ভাল আমারও ভাল’ প্রকল্প। প্রাথমিক পর্যায় থেকে এটির শুরু করা উচিত। আজ যারা পড়াশোনা শুরু করছে তাদের শিক্ষার গোড়াপত্তনের সঙ্গে সঙ্গেই শোনা উচিত শক্তি সংরক্ষণের নানা রকমের পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া। পৃথিবীর সমস্ত সম্পদ দু’ হাতে অপচয় করা একটি ক্ষমাহীন অপরাধ। আমরা ইতিমেধ্যই প্রচুর উন্নতমানের জ্বালানি ব্যবহার করেছি যেখানে সাধারণ মানের জ্বালানিতেই কাজ চলত। তাই আমাদের উচিত আমাদের সমস্ত প্রাথমিক বিদ্যলয়ে শক্তি সংরক্ষণ শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা। তারা শিখলে বাড়ির লোকজনকেও তারা শেখাতে পারবে।
মনে রাখতে হবে, সুযোগ পেলেই সূর্যের তাপ, আলো ও বায়ু শক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। সূর্য ও বায়ু তাদের অপরিসীম শক্তি দিয়ে অনাদিকাল থেকেই আমাদের সাহায্য করে আসছে এবং এই শক্তি ব্যবহার করতে পয়সা খরচ হয় না। বিদ্যুতের বাণিজ্যিক ব্যবহার তো একশো বছরের কিছু বেশি সময় ধরে হয়ে আসছে। কিন্তু মানব সভ্যতার ইতিহাস তো অনেক পুরনো, এই আলো হাওয়া কাজে লগিয়েই তো আমরা বহাল তবিয়তে আছি। তাই দিনের বেলায় বাতি না জ্বালিয়ে সূর্যের আলোয় কাজকর্ম করা উচিত। অল্পস্বল্প জল গরমও করা যায় এই শক্তিতে। বায়ুশক্তি ও সৌরশক্তি দিয়ে তো বিদ্যুৎ উৎপাদন করাই যায়। কিন্তু আমরা প্রত্যেক বাড়িতে যা করতে পারি তা হল বায়ুশক্তি ব্যবহার করে ভিজে জামাকাপড় শুকানো। এ ভাবে বহু বিদ্যুৎ বাঁচানো সম্ভব আর মনে রাখতে হবে ১ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ যদি কোনও গ্রাহক বাঁচাতে পারে তবে উৎপাদনকেন্দ্র ১.২ কিলোওয়াট বি্দ্যুৎ কম উৎপাদন করবে।
সূত্র : যোজনা, মে ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/28/2020