শেল গ্যাস সদ্য আবিষ্কৃত হলেও এটি আসলে একটি প্রাকৃতিক গ্যাস মাত্র। এর ব্যবহারও মানবজাতির কাছে অজানা ছিল না। জানা ছিল না এটি সংগ্রহ করার সহজ কোনও পদ্ধতি। বিজ্ঞানীরা এটিকে সহজ অর্থাৎ আর্থিক দিক থেকে আকর্ষক করে তুলেছেন। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে আমাদের দেশে এর ভাণ্ডার প্রায় ২৯০ ট্রিলিয়ন কিউবিক ফিট যার মধ্যে ৬৩ মিলিয়ন টিসিএফ উত্তোলন করা সম্ভব। ডাইরেক্টর জেনারেল অফ হাইড্রোকার্বন বা ডিজিএইচ একটি সমীক্ষা চালাচ্ছেন এবং সারা দেশে অঞ্চলভিত্তিক লাইসেন্স প্রদানের ব্যাপারে চিন্তাভাবনা চলছে।
এ ছাড়া এখন সারা দেশ জুড়ে সমীক্ষা চলছে কোল বেড মিথেন বা সিবিএম নিয়ে। রানিগঞ্জ, ঝরিয়া এবং সোহাগপুর অঞ্চলে ব্লক বিতরণের মাধ্যমে সিবিএমের বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড শুরু হয়ে গিয়েছে। উৎপাদনের মাত্রা এখন একটু কম হলেও যান্ত্রিক সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে অচিরেই এর উৎপাদন অনেকটা বাড়ানো সম্ভব। জমি পাওয়া একটা প্রধান বাধা। শুধু সিবিএম বা শেল গ্যাসের জন্যও প্রয়োজন জমি। কিন্তু সেই জমি পাওয়াও একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
২০০৯ সালের এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী ভারতবর্ষে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ২৬ শতাংশ পাওয়া গিয়েছিল বায়োমাস বা জৈবভর, জলবিদ্যুৎ ও অন্যান্য অচিরাচরিত মাধ্যম থেকে। ২০১১ সালের এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন করা দেশগুলির মধ্যে ভারত রয়েছে পঞ্চম স্থানে। এই ধরনের বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ ও চালু করার কাজ দিনের কাজ দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। ফোটোভোলটাইক বা পিভি দ্বারা উৎপন্ন গ্রিড সংযুক্ত সৌর বিদ্যুতের পরিমাণ বর্তমানে এক গিগাওয়াটের কিছু বেশি। জলবিদ্যুতের ক্ষেত্রে সিইএ-র রিপোর্ট অনুযায়ী আমাদের দেশে প্রায় দেড় লক্ষ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যেতে পারে, এর মধ্যে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকাতেই সম্ভাবনা রয়েছে প্রায় ৬৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করার। অবশ্য জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের আগে ভারত সরকারের পরিবেশ মন্ত্রকের ছাড়পত্র পাওয়া অবশ্যই জরুরি। জলবিদ্যুতের ক্ষেত্রে আরও একটি সাধারণ সমস্যা দেখা যায় — পূর্ণ ক্ষমতাসম্পন্ন জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের আদর্শ অবস্থান এমন দুর্গম জায়গায় হয় যে উৎপন্ন করা বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে নিয়ে আসতে বেশ অসুবিধা হয়।
সূত্র : যোজনা, মে ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/14/2019