কিন্তু হ্যাঁ। একটা বড় কিন্তুও রয়েছে এর ভেতরে। সেটি হচ্ছে দরিদ্র গ্রামবাসীদের সামর্থ্যের তুলনায় এই বায়োগ্যাস বড়ই মহার্ঘ। এর খরচ অনেক। প্রায় চারশো ইউরো খরচ পড়ে যায়। এক জন কৃষক বড়জোর বছরে আয় করতে পারেন এক হাজার ইউরো। সেখান থেকে চারশো ইউরো জ্বালানির জন্য বায়োগ্যাসে ঢাললে তাঁরা খাবেনটা কী! যদিও নেপাল সরকার ভর্তুকি হিসাবে সিকি অংশ বহন করে। কিন্তু তার পরও বাকি অংশ ভরতে ফতুরই হয়ে যেতে হয়। সুতরাং তাঁদের আবার সেই কাষ্ঠাহরণে বনেই যেতে হয়।
অবশ্য ডব্লিউডব্লিউএফ আশা করছে, এই বায়োগ্যাস প্রকল্পটি সবার নাগালের মধ্যে আনার লক্ষ্যে তারা ইউরোপের স্বেচ্ছাসেবী কার্বন অফসেট মার্কেট থেকে সাত লক্ষ ইউরো তুলতে পারবেন।
ডব্লিউডব্লিউএফ উদ্ভাবিত ‘কার্বন ক্রেডিট' এমন একটি পণ্য, যা অর্থের বিনিময়ে বিকিকিনি করা হয়। আসলে বিষয়টি ভার্চুয়াল। বায়োগ্যাসের সহায়তা নিয়ে যদি পৃথিবীর এক টন কার্বন বাঁচানো যায়, সেই বিষয়টিই হল ‘কার্বন ক্রেডিট’। একটি সুইস এনজিও তাদের ‘মাই ক্লাইমেট' নামের একটি সেবার জন্য নগদ টাকায় এটি আবার কিনেও নেয়। খুব সাধারণ অনলাইন ব্যবস্থার মাধ্যমে ‘মাই ক্লাইমেট' বিভিন্ন জনের কাছে কার্বন পোড়ানোর বিষয়টি তুলে ধরে আর তাঁদের পোড়ানো কার্বনের প্রেক্ষিতে অর্থ সাহায্য চায়। যেমন কেউ হয়তো গাড়ি চালিয়ে গ্রিস যাচ্ছেন, তাঁর কাছে পাইপয়সা হিসাব দিয়ে বলা হল, ‘তুমি স্রেফ গ্রিসে যেতেই পৃথিবীর এত খানি কার্বন পুড়িয়েছো। এ বার কিছু অর্থ সহায়তা করো। আর এ ভাবে সংগৃহীত অর্থে নেপালের বাদ্রেনি'র বায়োগ্যাস প্রকল্পটিকে অর্থায়নের চিন্তা করছে তারা।
বাস্তবতা হচ্ছে, এটি এখনও পরীক্ষামূলক। বাস্তবতা হচ্ছে, বাদ্রেনির দরিদ্র গ্রামবাসীদের সামর্থ্যের বিবেচনায় এটি মহার্ঘ। সত্য হচ্ছে সেখানকার মাত্র কয়েক জনই এখনও পর্যন্ত এই সুযোগ বা সুবিধা, যাই বলি না কেন, তা কাজে লাগাতে পারছেন। মোটের ওপর এটি এখনও পরীক্ষামূলকই রয়ে গেছে। সব মিলিয়ে বাস্তবিকই কার্বন পোড়ানো বন্ধ করার অবস্থানে পৌঁছাতে এর আরো অনেক উৎরাই ডিঙোনোই বাকি রয়েছে।
সূত্র : হুমায়ুন রেজা, ডিডাবলু ওয়েবসাইট
সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/28/2020