পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ দফতরের এক কর্তা জানান, আগে ঠিক হয়েছিল, দু’টি সংস্থাই তাদের শ্রম-সম্পদ বাড়ানোর সঙ্গ সঙ্গে আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করবে। ২০১০ সালের মধ্যে তারা পারস্পরিক নির্ভরতা কাটিয়ে কাজ শুরু করবে দু’টি স্বাধীন সংস্থা হিসেবে। কিন্তু তা হয়নি। এ বার সিদ্ধান্ত হয়েছে, ২০১৫-’১৬ অর্থবর্ষ থেকে ওই দুই সংস্থা স্বাধীন ভাবে কাজ করবে। কেউ কারও সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করবে না, পরস্পরের উপরে কোনও ভাবে নির্ভরও করবে না।
সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে তৃণমূল সমর্থিত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদ কর্মী ইউনিয়ন। ওই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অরিজিৎ দত্ত বলেন, “দু’টি সংস্থা এক সঙ্গে থাকায় অনেক সময় সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হচ্ছে। আলাদা হয়ে গেলে সেটা হওয়ার কথা নয়। আমাদের সম্মতির কথা সরকারকে জানিয়ে দিয়েছি।” সংবহন সংস্থার কর্তাদের একাংশের দাবি, তাঁরা নিজেরাই আলাদা হয়ে যেতে চাইছিলেন। কারণ, যৌথ সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে কাজ করতে গিয়ে প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই সমস্যা তৈরি হচ্ছে।
কর্মীর সংখ্যা ও আয়ের নিরিখে সংবহনের থেকে বণ্টন সংস্থা তুলনায় বড় বলে জানাচ্ছেন বিদ্যুৎ দফতরের এক কর্তা। কিন্তু আর্থিক দিক থেকে দেখলে ছোট সংস্থার অবস্থা বড়টির চেয়ে ভাল। বিষয়টি ব্যাখ্যা করে দফতরের এক কর্তা জানান, বণ্টন সংস্থার কাজ হল, গ্রাহকদের কাছে বিদ্যুৎ বিক্রি করে মাসুল আদায় করা। আর ওই বিদ্যুৎ হাইটেনশন লাইনের মাধ্যমে গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেওয়া সংবহন সংস্থার কাজ। এই কাজের জন্য তারা বণ্টন সংস্থা থেকে ‘কমিশন’ পায়। গ্রাহকদের বিল বাকি পড়ে গেলে বণ্টন সংস্থার রাজস্ব আদায়ও স্বাভাবিক নিয়মেই কমে যায়। সংবহন সংস্থার ক্ষেত্রে সেই আশঙ্কা নেই। কারণ, দুই সংস্থার মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী সংবহন সংস্থার প্রতি মাসে যে-কমিশন পাওয়ার কথা, বণ্টন সংস্থা তা মিটিয়ে দিতে বাধ্য থাকে। ফলে সংবহন সংস্থার আয় তো কমেই না। বরং গ্রাহকের সংখ্যা এবং মাসুল বাড়লে তা বেড়ে যায়।
নবান্নের খবর, বণ্টন ও সংবহন সংস্থা পৃথক হয়ে গেলে উভয়েই নিজেদের মতো কর্মী এবং চেয়ারম্যান নিয়োগ করতে পারবে।
সূত্র : পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়, আনন্দবাজার পত্রিকা, ২১ মার্চ ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/28/2020