মানুষের বর্জ্য দিয়ে চলছে বাস, জল সরবরাহ, সুয়ারেজ ব্যবস্থা। ওয়াসেক্স ওয়াটার নামে একটি প্রতিষ্ঠান এমন একটি বাস তৈরি করেছে যা মানুষের মোল থেকে প্রস্তুত জ্বালানি দিয়ে চলছে। এটিকে নবায়নযোগ্য শক্তিচালিত এবং পরিবেশ-বান্ধব যাত্রীবাহী বাস বলে দাবি করা হচ্ছে। বাসটি মূলত জৈব মিথেন গ্যাস চালিত ইঞ্জিনে চলে। আর এ মিথেন গ্যাস উৎপাদন করা হয় মানুষের মল থেকে। সম্প্রতি এই বাস পরীক্ষামূলক ভাবে ব্রিস্টলের রাস্তায় নামানো হয়েছে। মানুষের উপযোগী আরও বড় পরিকল্পনার অংশ হিসাবেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ওয়েসেক্স ওয়াটার জানিয়েছে, প্রায় সাত বছরের প্রচেষ্টার ফসল এই বাস। তারা বহু দিন থেকেই এরকম একটি প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে। বর্তমানে তারা এমন একটি ব্যবস্থার উদ্ভাবন করেছে যার মাধ্যমে মানুষের মল থেকে জৈব মিথেন গ্যাস উৎপন্ন করা হয় এবং সে গ্যাস সাড়ে ৮ হাজার বসতবাড়ির প্রয়োজন মেটাতে যথেষ্ট। তার সঙ্গে একটি যাত্রীবাহী বাসের জ্বালানি চাহিদা মেটাতেও সক্ষম। তাদের জেনেকো নামে ওই প্রকল্পের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সাদিক এ ব্যাপারে বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের শহরগুলোর বায়ু গুণগত মান উন্নয়নে গ্যাসচালিত যানবাহনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু এই জৈব বাস আরও বেশি ভূমিকা রাখবে। কারণ এর জ্বালানি হবে এখানকার অধিবাসীদেরই মল থেকে। তাঁরা এই বাসের যাত্রীও বটে।’ এই পদ্ধতি শুধু যে টেকসই জ্বালানি ব্যবস্থাই উপহার দেবে তা-ই নয়, জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতাও কমাবে বলে মনে করেন তিনি।
টয়লেটে জলের বদলে সৌরশক্তি ব্যবহার করলে মানুষের বর্জ্য দ্রুত মিথেন গ্যাসে পরিণত হবে এবং তা ব্যবহার উপযোগী করে পরে অন্য শক্তির উৎস হিসাবে কাজে লাগানো যেতে পারে। তবে একটি বা দুটি টয়লেট দিয়ে এ ধরনের কাজ চালানো সম্ভব নয়। এই কারণে টয়লেটগুলির একটি চেইন বা শৃঙ্খল গড়ে তোলা প্রয়োজন যাতে ওই গ্যাসকে কোথাও জমা করা যায়। পরে সেই গ্যাস টারবাইনে পাঠিয়ে বিদ্যুৎ তৈরি করা খুবই সম্ভব। তবে ভারতে এ ধরনের প্রকল্প গড়তে গেলে প্রবল জনসচেতনতা দরকার। মানুষের বর্জ্য থেকে পাওয়া শক্তিকে জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করে বাস অবধি চালানো সম্ভব। এ ধরনের প্রকল্প রূপায়নে সংগঠিত উদ্যোগ অবশ্য এখনও তেমন দেখা যায়নি।
সূত্র : নিউজ ব্রেক ওয়েবসাইট
সর্বশেষ সংশোধন করা : 2/14/2020