বিশ্বে বিদ্যুৎ সুবিধা-বঞ্চিত মানুষের সংখ্যা ৬২ কোটি ৮০ লক্ষ। এর ২৯ কোটিই বসবাস করেন ভারতের গ্রামাঞ্চলে। সে জন্য বেশির ভাগ ভারতীয় কৃষক চাষাবাদের জন্য সেকেলে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করে নলকূপ দিয়ে জলসেচের ব্যবস্থা করেন।
কেন্দ্রীয় সরকার জমিতে সেচের জন্য ডিজেল চালিত ২৬০ লক্ষ গভীর নলকূপের পরিবর্তে সৌরশক্তিচালিত নলকূপ স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। আর এর ফলে বিদ্যুৎ এবং ডিজেলের পিছনে বছরে সরকারের যে ৬০০ কোটি মার্কিন ডলার ভর্তুকি, তা বেঁচে যাবে। তা ছাড়া দিন দিন যে ভাবে কয়লার চাহিদা বাড়ছে, সেটাও লাঘব হবে। সৌরশক্তির মাধ্যমে উৎপাদিত বিদ্যুতের অব্যবহৃত অংশ জাতীয় গ্রিডে যোগ করা হবে।
২০১৩ সালে ভারত তাদের সৌরশক্তি উৎপাদনের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ করেছে। বর্তমানে এর পরিমাণ ২.১৮ গিগাওয়াট। ভারত তার জাতীয় সৌরশক্তি পরিকল্পনা নীতি- জহরলাল নেহরু ন্যাশনাল সোলার মিশন অনুযায়ী ২০১৫ সালের মধ্যে ১০ গিগাওয়াট এবং ২০২২ সালের মধ্যে ২০ গিগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উত্পাদনের পরিকল্পনা নিয়েছে। তা ছাড়া রাজস্থানের সাম্ভারে দেশের বৃহত্তম সৌর প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য বিশ্ব ব্যাংকের কাছে ৫০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণের আবেদন করেছে। ইন্ডিয়ান পাবলিক সেক্টর ব্লগে ইয়াদভ কে সাম্ভারে ৪ গিগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন সৌর প্লান্টের বিস্তারিত তুলে ধরেছেন:
রাজস্থানের সাম্ভারের এই প্রজেক্টের জন্য ১৯ হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। প্রথম ধাপে এতে ব্যয় হবে ৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। সোলার পিভি পাওয়ার প্লান্টের জন্য পিভি মডিউল ভিত্তিক ক্রিস্টালাইন সিলিকন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। প্লান্টের মেয়াদকাল হবে ২৫ বছর। এই প্ল্যান্ট থেকে প্রতি বছর ৬৪০ কোটি ইউনিট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। তা ছাড়া পরিবেশ-বান্ধব এই প্রজেক্ট প্রতি বছর ৪০ লক্ষ টন কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমন কমাবে।
কেটি ফেহরেনবেচার প্রযুক্তি বিষয়ক ব্লগ ‘গিগা ওমে’ লিখেছেন:
আরও বেশি যন্ত্র নেটওয়ার্ক এবং ইন্টারনেটে সংযোগ স্থাপন করতে পারবে- অন্তর্জালিক উপস্থিতিও বাড়বে – তারা আগের চেয়ে আরও বেশি করে সৌরশক্তির উৎস খুঁজবে। বর্তমানে সৌরশক্তি সবচেয়ে সস্তা এবং এটা খুব সহজেই এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নিয়ে গিয়ে সরবরাহ করা যায়।
ভারত যদি এই পরিমাণ সৌরশক্তি চালিত নলকূপ স্থাপন করতে পারে, তা হলে একটি মাত্র দেশে এই ধরনের প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় উন্নয়নমূলক কাজ বলে বিবেচিত হবে। ভারতের সরকারের এই উদ্যোগ সফল হলে, এটা শুধু গ্রিড বিদ্যুৎ এবং ব্যয়বহুল ডিজেলের ব্যবহার কমাবে না, এটা ক্ষতিকর কার্বণ নি:সরণ কমানোর পাশাপাশি কৃষকদের বিদ্যুতের খরচও কমিয়ে দেবে।
সূত্র : গ্লোবাল ভয়েস ওয়েবসাইট, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪
সর্বশেষ সংশোধন করা : 2/14/2020