রাজ্যগুলিকে বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরিতে উত্সাহ দেওয়ারও আর্জি জানাচ্ছে কেন্দ্র। অম্বুজ শর্মার বক্তব্য, দিল্লি ও গোয়ায় এ ধরনের গাড়ির উপর যুক্তমূল্য কর (ভ্যাট) কিংবা রেজিস্ট্রেশন কর নেই। এ বার অন্য রাজ্যগুলিও সেই পথে হাঁটলে বৈদ্যুতিক গাড়ি কেনার আগ্রহ বাড়বে। সব মিলিয়ে মাসকয়েকের মধ্যেই কেন্দ্রের প্রকল্প চূড়ান্ত অনুমোদন পাবে বলে আশা করছেন তিনি।
এনইএমএমপি প্রকল্পে কেন্দ্রের সঙ্গে যুক্ত ছিল এ দেশে গাড়ি শিল্পের সংগঠন সিয়ামও। সিয়ামের ডিরেক্টর জেনারেল বিষ্ণু মাথুর জানান, তাঁরাও কেন্দ্রীয় প্রকল্পটির দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। নীতি তৈরির পরে এ বার প্রকল্প পুরোদস্তুর চালু হলে, শুধু যাত্রীগাড়ি (প্যাসেঞ্জার কার ) নয়, ট্রাক বাস ইত্যাদিতেও সার্বিক ভাবে বৈদ্যুতিক ইঞ্জিন ব্যবহারের আগ্রহ বাড়বে। তাঁদের মতে, আগে নীতি থাকলেও, আর্থিক সুবিধা-সহ পুরো প্রকল্প না থাকায়, বৈদ্যুতিক গাড়ির সহায়ক পরিবেশ গড়ে ওঠেনি। ফলে এখন তা কার্যকর হলে, সমস্যার সুরাহা হওয়ার সম্ভাবনা।
উল্লেখ্য, এনইএমএমপি-তে বলা হয়েছিল যে, বৈদ্যুতিক গাড়ি শিল্পের প্রসারের লক্ষ্যে আগামী ৫–৬ বছরে ১৩–১৪ হাজার কোটি টাকা খরচ করা প্রয়োজন সরকারের। তবে শিল্পকেও এ ধরনের গাড়ি তৈরি ও তার সার্বিক পরিকাঠামো গড়ার জন্য আরও বেশি করে টাকা ঢালতে হবে।
ভারতের বাজারে বৈদ্যুতিক গাড়ির সম্ভাবনা নিয়ে সিয়াম ও ভারী শিল্প মন্ত্রকের যৌথ উদ্যোগে একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল উপদেষ্টা সংস্থা বুজ অ্যান্ড কোম্পানি। সমীক্ষকদের দাবি, ২০২০ সালের মধ্যে ভারতে ৫০ থেকে ৭০ লক্ষ হাইব্রিড ও বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে। শেষ পর্যন্ত তা সত্যিই হলে, বছরে ২২–২৫ লক্ষ টন জ্বালানি ব্যবহার কমার সম্ভাবনা।
প্রসঙ্গত, পেট্রোল বা ডিজেলের মতো প্রথাগত জ্বালানির বদলে পুরোপুরি বৈদ্যুতিক এবং আংশিক বৈদ্যুতিক বা হাইব্রিড (যেখানে প্রথাগত জ্বালানি ও বিদ্যুৎ দু’টিই ব্যবহারের ব্যবস্থা থাকে) গাড়ি ব্যবহারের ব্যবস্থা জোর দেওয়া হচ্ছে সারা বিশ্বেই। কারণ, তাতে জ্বালানি তেলের সীমিত সঞ্চয়ের সমস্যা যেমন কিছুটা কমবে, তেমনই কমবে দূষণও। তা ছাড়া, কিলোমিটার পিছু পেট্রোল গাড়ি চড়ার খরচ যদি ৩.৫০ টাকা হয়, তা হলে বৈদ্যুতিক গাড়ির ক্ষেত্রে তা মাত্র ৫০ পয়সা। হাইব্রিড গাড়ির জন্য সেই খরচ একটু বেশি হলেও, পেট্রোল গাড়ির তুলনায় তা সস্তা।
আর এই সব কারণেই বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির গবেষণা-সহ বিভিন্ন খাতে ইতিমধ্যেই বড় অঙ্কের লগ্নির পরিকল্পনা নিয়েছে বিভিন্ন দেশ। যার মধ্যে রয়েছে আমেরিকা (৫০০ কোটি ডলার ) চিন (২,০০০ কোটি ডলার), জাপান (১৭০ কোটি ডলার), ফ্রান্স (৩৫০ কোটি ডলার) ইত্যাদি।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা, ২৫ অক্টোবর, ২০১৪।
সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/28/2020