গাড়ির দূষণ ঠেকাতে কলকাতায় ‘কম্প্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস’ (সিএনজি) চালু করা হবে না কেন, সে প্রশ্ন আগেই তুলেছিলেন পরিবেশবিদেরা। এ বার একই কথা বলল কলকাতার জাতীয় পরিবেশ আদালতও।
শুক্রবার কলকাতার যান-দূষণ নিয়ে একটি মামলায় পরিবেশ আদালতের বিচারপতি প্রতাপ রায় এবং বিশেষজ্ঞ-সদস্য পি সি মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চ এ ব্যাপারে মামলাকারী পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তকে একটি আর্জি দাখিল করতেও নির্দেশ দিয়েছে। সেই আর্জি খতিয়ে দেখেই এ ব্যাপারে আদালত পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে।
|
বায়ুদূষণের নিরিখে এ দেশের অনেক শহরই ধুঁকছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘হু’র একটি সমীক্ষায় বলা হয়েছে, দেশের মধ্যে বায়ুদূষণ সব থেকে বেশি দিল্লিতে। তার পরেই কলকাতা। এবং এই দূষণের সব থেকে বড় কারণ ডিজেলচালিত বড় গাড়ি। দিল্লি অবশ্য প্রায় ন’বছর ধরে বড় গাড়িগুলিকে সিএনজিতে চালাচ্ছে। পরিবেশবিদদের একাংশ বলছেন, এর ফলে কিছুটা হলেও দূষণে লাগাম টানতে পেরেছে রাজধানী। না হলে দূষণের নিরিখে বিশ্বেও এক নম্বর হতে পারত সে। বাস-মিনিবাসের মতো বড় গাড়িতে সিএনজি চালু করেছে মুম্বইও। সেখানে দেশের অন্যতম মহানগরী কলকাতার এই হাল কেন, সে ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
সম্প্রতি দিল্লিতে ‘দি এনার্জি অ্যান্ড রিসোর্সেস ইনস্টিটিউট’-এর একটি আলোচনাচক্রেও এই প্রসঙ্গ উঠেছিল। সেই অনুষ্ঠানে পরিবেশবিজ্ঞানীরা বলেছিলেন, যানবাহনের এই দূষণ জলবায়ু বদলের উপরেও প্রভাব ফেলছে। ডিজেলের মতো অপরিশোধিত জ্বালানির বদলে সিএনজি-র মতো উন্নত মানের জ্বালানি ব্যবহারের উপরে জোর না দিতে পারলে এই সমস্যা মিটবে না। কিন্তু এ রাজ্যে কি সিএনজি গ্যাস পাওয়া সম্ভব, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়ে।
যান-দূষণ বিশেষজ্ঞ সৌমেন্দ্রমোহন ঘোষ বলছেন, এ রাজ্যেও সিএনজি অমিল নয়। দুর্গাপুর-আসানসোল থেকে প্রাপ্ত প্রাকৃতিক গ্যাসকে সিএনজি-তে রূপান্তরিত করা হচ্ছে। ওই এলাকায় বিভিন্ন যানবাহনে সিএনজি ব্যবহারও করা হচ্ছে। বস্তুত, এর আগে সিএনজি ব্যবহার করা নিয়ে তিনি কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলাও করেছিলেন। সৌমেন্দ্রনাথবাবুর দাবি, ২০০৫ সালে সে ব্যাপারে রায়ও বেরোয়। কিন্তু তার পরে আর কোনও কাজ হয়নি। “তৎকালীন পরিবহণমন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তী বলেছিলেন, খুব শীঘ্রই রাজ্যে সিএনজি আনা হবে। সেই আশ্বাস বাস্তবায়িত হয়নি,” মনে করান তিনি।
সূত্র : নিজস্ব সংবাদদাতা, আনন্দবাজার পত্রিকা, ২০ মার্চ ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 12/20/2019