পশ্চিমবঙ্গের পরিবেশবিদদের একাংশ বলছেন, বাম আমলে রাজ্যের সিএনজি পরিকল্পনায় বলা হয়েছিল, ডানকুনিতে মূল সিএনজি হাব তৈরি করা হবে। দুর্গাপুর-আসানসোল থেকে পাইপলাইনে করে সেখানে গ্যাস আসবে। ডানকুনি থেকে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে গ্যাসপাম্পে সিএনজি পাঠানো হবে। এ দিন আদালতে একই কথা জানিয়েছেন সুভাষবাবুও।
তিনি বলেছেন, “ডিজেল থেকেই কলকাতায় যানবাহনের দূষণ বাড়ছে। সিএনজি থাকলে এই সমস্যা অনেকটাই মোকাবিলা করা যেত।” সুভাষবাবুর বক্তব্য, ডানকুনি থেকে শহরে গ্যাস আনার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু আসানসোল থেকে ডানকুনিতে গ্যাস আনার ব্যাপারেই সরকারের কোনও উদ্যোগ নেই।
যানবাহন বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছে, সিএনজি চালু করা হলে শুধু বড় গাড়ি নয়, ছোট গাড়ি কিংবা অটোকেও এর আওতায় আনা যাবে। শহরে এখন একমাত্র অটো এলপিজি-তে চলে। সৌমেন্দ্রমোহনবাবুর কথায়, “এলপিজি দিয়ে পেট্রোলচালিত গাড়ি চালানো সম্ভব। কিন্তু বড় গাড়ি এলপিজিতে চলবে না। সিএনজি দিয়ে অবশ্য সব ধরনের গাড়িই চালানো যায়।” পরিবহণ বিশেষজ্ঞদের অনেকেই বলছেন, দিল্লি-মুম্বইয়ে অটো সিএনজিতে চলে। ছোট গাড়িও ধীরে ধীরে সিএনজি ব্যবহার করছে।
আদালত এ ব্যাপারে সক্রিয় হলেও কত দিনে কলকাতায় সিএনজি চালু হবে, তা নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন রয়েছে। সুভাষবাবু জানান, এ দিন আদালতের নির্দেশেও একই ইঙ্গিত মিলেছে। শহরে দূষণ-ছাড়পত্র (পিইউসি) নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। পরিবেশ আদালত চায়, দূষণ-ছাড়পত্র না থাকলে কোনও গাড়ি জ্বালানি পাবে না (‘নো পিইউসি, নো ফুয়েল’)। বর্তমানে কলকাতায় ৬২টি দূষণ ছাড়পত্র দেওয়ার কেন্দ্র রয়েছে। ‘নো পিইউসি, নো ফুয়েল’ নীতি চালু হলে এই কেন্দ্রগুলি দিয়ে ছাড়পত্র দেওয়ার কাজ পুরোপুরি সম্ভব হবে কি না, তা পর্ষদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে।
যান-দূষণের এই মামলায় গাড়ির দূষণ মাপার জন্য রিমোট সেন্সিং যন্ত্র নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সরকার আদালতে জানিয়েছে, দেশীয় প্রযুক্তিতে রিমোট সেন্সিং যন্ত্র তৈরির ব্যাপারে খড়্গপুর আইআইটি এবং শিবপুর আইআইইএসটি-র সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। যদিও ওই দুই প্রতিষ্ঠান থেকে এখনও নির্দিষ্ট কোনও রিপোর্ট আসেনি।
এ দিন পরিবেশ আদালত আইআইটি-র অধিকর্তা এবং আইআইইএসটি-র উপাচার্যকে এ বিষয়টি ব্যক্তিগত ভাবে খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দিতে বলেছে। আগামী ২৪ এপ্রিল মামলাটির পরবর্তী শুনানি।
সূত্র : নিজস্ব সংবাদদাতা, আনন্দবাজার পত্রিকা, ২০ মার্চ ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/28/2020