অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

সুন্দরবন রক্ষায় সেনা নামাতেও তৈরি কোর্ট

সুন্দরবন রক্ষায় সেনা নামাতেও তৈরি কোর্ট

কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের প্রাকৃতিক রক্ষী সুন্দরবনের পরিবেশ রক্ষা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল জাতীয় পরিবেশ আদালত। কিন্তু সেই কাজে রাজ্যের ঢিলেমি দেখে তারা ক্ষুব্ধ। এতটাই যে, বুধবার ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে, রাজ্য সরকার ব্যর্থ হলে প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর সাহায্য নিয়ে সুন্দরবনের পরিবেশ রক্ষা করতে পারে জাতীয় পরিবেশ আদালত।

সুন্দরবন ‘ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’ হিসেবে চিহ্নিত। তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হল, কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গকে প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষার ক্ষেত্রে সব চেয়ে বড় ভূমিকা নেয় সুন্দরবনই। আসলে সুন্দরবনের সেই ত্রাতা-ভূমিকার জন্যই ওই জলবনাঞ্চলকে রক্ষা করার তাগিদ অনুভব করছেন আদালত থেকে বিশেষজ্ঞ থেকে আমজনতা। হেলদোল নেই শুধু সরকারের। পরিবেশবিদেরা বলছেন, সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ অরণ্যের জন্যই সামুদ্রিক ঝড় থেকে রক্ষা পায় কলকাতা। তাই সুন্দরবন বিপন্ন হলে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বড় অংশ বিপন্ন হয়ে পড়বে বলে পরিবেশবিদেরা মনে করছেন। কিন্তু রাজ্য সরকারের গয়ংগচ্ছ ভাব আর কাটছে না!

এই পরিস্থিতিতে সুন্দরবনের পরিবেশ রক্ষা নিয়ে কলকাতার জাতীয় পরিবেশ আদালতের পূর্বাঞ্চলীয় বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা দায়ের করেছিল। সেই মামলায় গত ২১ জানুয়ারি পরিবেশ আদালত নির্দেশ দিয়েছিল, মাতলা নদীর চর-সহ সুন্দরবনে যাবতীয় বেআইনি নির্মাণ ভেঙে ফেলতে হবে। ম্যানগ্রোভ ধ্বংস এবং যত্রতত্র গজিয়ে ওঠা বেআইনি ইটভাটার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে। সুন্দরবনের পরিবেশ রক্ষার জন্য রাজ্যের মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গড়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

বুধবার সেই মামলার শুনানিতে রাজ্য সরকার জানায়, মুখ্যসচিবকে চেয়ারম্যান করে ২৩ জনের কমিটি তৈরি করা হয়েছে। তাতে সদস্য-সচিব হিসেবে রয়েছেন রাজ্যের পরিবেশ দফতরের সচিব। পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত এবং অজন্তা দে ছাড়াও কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রকের এক প্রতিনিধি ওই কমিটিতে রয়েছেন। সুভাষবাবু এই মামলায় আদালতের সহকারী হিসেবেও কাজ করছেন।

সুভাষবাবু জানান, কমিটি গড়ার কথা বললেও সুন্দরবনের পরিবেশ রক্ষায় আদালতের নির্দেশ পালন করা হয়নি বলেই জানায় রাজ্য সরকার। এই বক্তব্য শুনেই অসন্তোষ প্রকাশ করে বিচারপতি প্রতাপ রায় ও বিশেষজ্ঞ সদস্য পি সি মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চ। সুভাষবাবু বলেন, “মাতলা নদীর চরে একটি আবাসন বেআইনি ভাবে গড়ে উঠছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসককে বলা হয়েছে, ওই আবাসনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে তার রিপোর্ট আদালতকে জানাতে হবে।” এ বিষয়ে ওই কমিটির এক কর্তা বলেন, “কমিটি তৈরি করে একটি স্টেটাস রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। এখন আদালত যা নির্দেশ দেবে, তেমনটাই করা হবে।” ২০ মার্চ ফের মামলাটির শুনানি হবে।

পরিবেশবিদদের একাংশ বলছেন, পরিবেশ রক্ষায় রাজ্যের মনোভাব চিরকালই ঢিলেঢালা। রাজ্যের উপকূল রক্ষার প্রকল্প নিয়েও বারবার বিশ্বব্যাঙ্কের সমালোচনা সইতে হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর পার্ষদ এবং কয়েক জন শিল্পপতিকে নিয়ে সম্প্রতি সুন্দরবনে গিয়েছিলেন। সেখানে পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে উদ্যোগী হওয়ার কথাও ঘোষণা করেন তিনি। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, উপকূল রক্ষার প্রকল্পে ‘ইকো-ট্যুরিজম’ বা পরিবেশ-পর্যটনের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু চার বছরেও সেই কাজ শেষ করা হয়নি। আদালত সুন্দরবনের পরিবেশ রক্ষায় রাজ্যের উদাসীনতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করার পরে মুখ্যমন্ত্রীর প্রকল্প নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। যদিও রাজ্য পর্যটন দফতরের কর্তারা বারে বারেই জানিয়েছেন, তাঁরা সুন্দরবনে পর্যটন শিল্প গড়লে প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র নিয়েই গড়বেন।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা, ৫ মার্চ ২০১৫

সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/28/2020



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate