ওজোন অক্সিজেনেরই প্রকারভেদ। তবে আলাদা ধরনের কারণ এটি বিষাক্ত গ্যাস। তিনটি অক্সিজেনের পরমাণু নিয়ে একটি ওজোনের অণু গঠিত। সুতরাং এর রাসায়নিক ফর্মুলা হল O3। অতিবেগুনি রশ্মির বিকিরণে বায়ুমণ্ডলের উচ্চ স্তরে অক্সিজেনের অণু ভেঙে গেলে ওজোন গ্যাস তৈরি হয়। যদি একটি মুক্ত অক্সিজেন পরমাণু (O) একটি অক্সিজেন অণুর (O2) সঙ্গে মিলিত হয় তা হলে তিনটি অক্সিজেন পরমাণু মিলে একটি ওজোনের অণু (O3) গঠিত হয়।
ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৫ থেকে ৫০ কিলোমিটার উপরে অবস্থিত স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে ওজোন স্বাভাবিক ভাবে অবস্থান করে। এটি সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মিকে ভূপৃষ্ঠে আসার ক্ষেত্রে বাধা প্রদান করে, ফলে জীবজগত রক্ষা পায়।
ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি বায়ুমণ্ডলে যানবাহনজনিত দূষণের কারণে নাইট্রোজেন অক্সাইড ও হাইড্রোকার্বনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। সূর্যের আলোর উপস্থিতিতে এই রাসায়নিকগুলি ওজোন তৈরি করে। এই ওজোন শরীরে নানা রকম সমস্যার সৃষ্টি করে যেমন কাশি হয়, গলায় অস্বস্তি বাড়ে, হাঁপানি রোগের কষ্ট বাড়ায়, ব্রঙ্কাইটিস হয় ইত্যাদি। এর ফলে শস্যের ক্ষতি হতে পারে। স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের ওজোন যেমন সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি আটকে প্রাণীজগতের উপকার করছে তেমনই নীচের বায়ুমণ্ডলে ওজোনের উপস্থিতি স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব ফেলছে।
ওজোন নিঃশেষীকরণের প্রধান রাসায়নিক হল ক্লোরোফ্লুরোকার্বন। এই রাসায়নিকটি রেফ্রিজারেটরে রেফ্রিজার্যান্ট হিসাবে, এয়ারকন্ডিশন মেশিনে ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে ক্লোরিন আছে।
ওজোন স্তর ক্রমশ নিঃশেষিত হতে থাকলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ভূপৃষ্ঠে পৌঁছনোর ব্যাপারে আর তেমন বাধা পাবে না। এর ফলে জিনগত বিচ্যুতি হতে পারে, ত্বকের ক্যানসার (মেলানোমা বা নন-মেলানোমা) হতে পারে, ত্বকের বয়স সময়ের আগেই বেড়ে যেতে পারে, চোখে ছানি পড়া সহ অন্যান্য ক্ষতি হতে পারে , দেহের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সামুদ্রিক পরিবেশের উপরও এর খারাপ প্রতিক্রিয়া পড়তে পারে।
সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/14/2019