সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে পার্সোনাল কম্পিউটার এবং তার অন্যান্য সহযোগী অংশ যেমন, প্রিন্টার, মোডেম, অয়াই-ফাই ইত্যাদি থেকে তড়িৎ-চুম্বকীয় বিকিরণ নির্গত হয়। এই বিকিরন আমাদের শরীরের নানা ক্ষতি করতে পারে। যেমন, ঘুমের ব্যাঘাত হয়, অ্যালার্জি দেখা দিতে পারে, এমনকী হৃদযন্ত্রের রোগ হতে পারে। পুরনো বক্স ধাঁচের ক্যাথড রে টিউব কম্পিউটার মনিটর থেকে ৩০ সেমি দূরত্বে ৩ মিলিগস এবং পাশ থেকে ৪ মিলিগস বিকিরণ হয়।
পার্সোনাল কম্পিউটার বা পিসি থেকে বিকিরণ এড়ানোর জন্য কিছু পরামর্শ –
প্রথমেই যেটা করতে হবে, তা হল আপনার পুরনো পিসি বদলে ফেলুন। সমীক্ষায় দেখা গেছে, পুরনো বক্স ধাঁচের ক্যাথড রে টিউব কম্পিউটার মনিটর থেকে সব চেয়ে বেশি বিকিরণ হয়। এলসিডি মনিটরে তার চেয়ে অপেক্ষাকৃত কম বিকিরণ হয়ে থাকে। এলসিডি স্ক্রিনে ইএমএফ (খুবই কম ফ্রিকোয়েন্সির) নির্গত হয়। যার পরিমাপ কম্পিউটারের পিছন বা সামনে থেকে ৩০ সেমি দূরত্বে ০.৩ মিলিগস। কিন্তু কম্পিউটারের পাশ থেকে তেমন কোনও বিকিরণ নির্গত হয় না। সমীক্ষায় আরও দেখা যাচ্ছে, পুরনো কম্পিউটারে বিকিরণের পরিমাণ নতুন কমপিউটারের দ্বিগুণ। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে নতুন মডেলের কম্পিউটারে বিকিরণের মাত্রা কম রাখার চেষ্টা করা হয়েছে।
কম্পিউটারের স্ক্রিনের সঙ্গে বিকিরণরোধী ফিল্টার লাগিয়ে নিলে কম্পিউটার জনিত বিকিরণ কমিয়ে দেওয়া সম্ভব। আপনার কম্পিউটারের আশপাশে কোনও ধাতব পদার্থ রাখবেন না। কারণ ধাতব পদার্থ তড়িৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গকে প্রতিফলিত করে।
দেখতে সুবিধা হয় স্ক্রিনে এমন উজ্জ্বলতা বজায় রাখুন। রিপোর্ট অনুযায়ী দেখা গিয়েছে, কম্পিউটার স্ক্রিনের উজ্জ্বলতা যত বেশি হবে তত বিকিরণ বেশি হবে। উজ্জ্বলতা কম হলে বিকিরণও কম হবে। দেখবেন উজ্জ্বলতা এমন কমিয়ে দেবেন না যা আপনার চোখের পক্ষে ক্ষতিকারক। স্ক্রিনের থেকে ৫০ থেকে ৭৫ সেন্টিমিটার দূরে বসে কাজ করাই সব চেয়ে ভাল।
ক্ষতিকারক পিসি বিকিরণের হাত থেকে বাঁচার জন্য কোথায় সেটি বসাবেন তা স্থির করুন। কেউ বসে থাকেন এমন কোনও জায়গায় যেন কম্পিউটারের পিছন দিকটি না থাকে। তার কারণ রিপোর্টে দেখা গিযেছে, কম্পিউটারের পিছন দিকে সামনের দিকের চেয়ে অনেক বেশি বিকিরণ হয়।
কম্পিউটার স্ক্রিন থেকে ক্যানসারের কারণ হতে পারে এমন পদার্থ (কারসিনোজেনিক) নির্গত হয় যা শরীরের পক্ষে খুবই ক্ষতিকারক। ঘরে যদি বায়ু চলাচলের ঠিকমতো ব্যবস্থা থাকে তা হলে এই বিপদের হাত থেকে অনেকটাই রক্ষা পাওয়া যায়। পিসির কাছে বায়ু চলাচলযোগ্য কুলার/ফ্যান বসাতে পারেন। তড়িৎ-চুম্বকীয় বিকিরণের পদার্থ যাতে মুখে লেগে না থাকে তার জন্য মাঝে মাঝেই মুখ পরিষ্কার করে নিন। এই পদ্ধতি মেনে চললে বিকিরণজনিত সমস্যার হাত থেকে ৭০ শতাংশ মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
সূত্র : টাইমস অফ ইন্ডিয়া
সর্বশেষ সংশোধন করা : 7/20/2020