রাজীব গান্ধী গ্রামীণ বৈদ্যুতীকরণের কাজ গোটা দেশ জুড়ে মাত্র কয়েকটি জেলায় গোড়ায় সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গে যেমন গোড়ায় শুধু সীমান্তবর্তী জেলাগুলি এই প্রকল্পের সুবিধা পায়। পরে অবশ্য দ্বিতীয় পর্যায়ে অন্য সবক’টি জেলায় বৈদ্যুতীকরণের কাজ হয়েছে। সেই জন্য শক্তি ব্যবহারের মাপকাঠিতে ভারতের অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। শক্তি ব্যবহারের মাপকাঠিতে ভারতের স্থান এখন চতুর্থ। চীন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জাপানের পরেই ভারতের স্থান। বিশ্বে মোট ব্যবহৃত শক্তির ৪.৬ সতাংশই ভারতে খরচ হয়।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের লক্ষ্য এই রাজ্যের প্রতিটি ঘরে দ্রুত বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া। ‘প্রতি ঘরে আলো’ পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য পূরণে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করে চলেছে। পাহাড় থেকে সাগর, দুর্গম এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলেও গ্রামীণ পরিবারে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি বদ্ধপরিকর।
জাতীয় গ্রামীণ বৈদ্যুতীকরণ কর্মসূচি অনুসারে প্রতিটি গ্রামীণ পরিবারে বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির (ডাবলুবিএসইডিসিএল) উপর গ্রামীণ বৈদ্যুতীকরণ প্রকল্পের দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে।
প্রথম রাজীব গান্ধী গ্রামীণ বৈদ্যুতীকরণ যোজনা (দশম পরিকল্পনা) অনুযায়ী রুরাল ইলেকট্রিফিকেশন কর্পোরেশন (আরইসি) লিমিটেডের আর্থিক সহায়তায় মৌজাগুলির কাজ শুরু করেছিল ডাবলুবিএসইডিসিএল এবং কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ চারটি সংস্থা। সেগুলি হল ডিভিসি, এনটিপিসি, এনএইচপিসি এবং পিজিসিআইএল। এই প্রকল্প অনুসারে ৪৫৯.০৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৩৯৩০টি মৌজায় ৯২৮৩৫টি বিপিএল পরিবারকে এর আওতায় আনা হয়েছিল।
রাজীব গান্ধী গ্রামীণ বৈদ্যুতীকরণ যোজনা (একাদশ পরিকল্পনা) অনুসারে এই প্রকল্প আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় এবং ১৪টি জেলাকে (কোচবিহার, দার্জিলিং, শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ এলাকা, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদা, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, বীরভূম, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা) বৈদ্যুতীকরণের জন্য কেন্দ্রীয় সাহায্য বরাদ্দ করা হয়। এই কাজটির দায়িত্ব অর্পিত হয়েছিল ডাবলুবিএসইডিসিএল এবং কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ তিনটি সংস্থা — এনটিপিসি, এনএইচপিসি এবং পিজিসিআইএলের উপর। এই প্রকল্প অনুযায়ী ২৩৮৪৭টি মৌজায় ২১.২৫ লক্ষ বিপিএল পরিবারকে বিনা খরচে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পটি ১৩টি জেলায় সম্পূর্ণ হয়েছে। হুগলি জেলার কাজ ফেব্রুয়ারি ২০১৫-র মধ্যে সম্পন্ন হবে।
সূত্র : পঞ্চায়েতী রাজ, জানুয়ারি ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/24/2020