প্রিডাইজেস্টর ট্যাঙ্কে উচ্চ তাপমাত্রা বজায় রাখা হয়। প্রিডাইজেস্টর ট্যাঙ্কে থার্মোফাইলের বৃদ্ধি বর্জ্যের সঙ্গে গরম জল মিশিয়ে ও ৫০-৬০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা বজায় রেখে নিশ্চিত করা হয়। সৌর হিটারের সাহায্যে জল গরম করা হয়। গরম জলের জন্য দিনে ১ ঘণ্টা সূর্যালোকই যথেষ্ট।
কঠিন বর্জ্যভিত্তিক জৈবগ্যাস প্লান্ট আরও মসৃণ ভাবে চালানোর জন্য চোকিং অর্থাৎ পদার্থ যাতে প্লান্টের পথ রুদ্ধ না করে তার দিকে নজর দেওয়া দরকার। ঘন জৈবভর থাকার জন্য চোকিং হয়। চোকিং হয়। ক্ষুদ্র জীবাণুগুলো ওই জৈবভর হজম করতে পারে না, ফলে চোকিং হয়। সেই জন্য যুক্তিসম্মত কাজ হল বর্জ্যকে আগে থেকে কাদা-মিশর্ণে পরিণত করা যার ভিতর অনেক ভালো ভাবে ক্ষুদ্র জীবাণুগুলো কাজ করে। এর জন্য একটি উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন মিক্সারের প্রয়োজন।
প্রিডাইজেস্টর ট্যাঙ্ক হয়ে কাদা-মিশ্রণ মূল ট্যাঙ্কে মূলত অবাত বিক্রিয়ার জন্য প্রবেশ করে এখানে মিথানোককাস গ্রুপের আর্কিব্যাকটেরিয়া মিশ্রণটির উপর ক্রিয়া করে। এই ধরনের ব্যাকটেরিয়া সচরাচর গবাদিপশুর রেচনপ্রণালীর ভিতর লভ্য। কাদা-মিশ্রণ সেলুলোসিক পদার্থ থেকে এই ব্যাক্টেরিয়া মিথেন তৈরি করে।
আত্মীভূত হয়নি এমন লিগনোসেলুলোসিক এবং হেমিসেলুলোসিক পদার্থ একটি ট্যাঙ্কে জমা হয়। এক মাস পরে এখান থেকে উচ্চক্ষমতাশালী সার বের করে আনা যায়। এই সারে কোনও গন্ধ পাওয়া যায় না। এর জৈব উপাদান অত্যন্ত বেশি এবং এটি সারমাটির মান উন্নত করে। ফলে মাটির উর্বরতা বাড়ে।
মূল ট্যাঙ্কে গ্যাস তৈরি হওয়ার সময় গম্বুজটি ধীর ধীরে উপর দিকে তোলা হয়। এটি সর্বোচ্চ ৮ফুট উচ্চতায় উঠতে পারে ও ৩৫ ঘনমিটার গ্যাস ধারণ করতে পারে। এই গ্যাস মিথেন (৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ), কার্বন ডাই অক্সাইড (১০ থেকে ১৫ শতাংশ) এবং জলীয় বাষ্পের (৫ থেকে ১০ শতাংশ) মিশ্রণ। এটি জিআই পাইপ লাইনের মাধ্যমে ল্যাম্প পোস্টে নিয়ে যাওয়া হয়। জমাট জলীয় বাষ্পের জন্য ড্রেনের ব্যবস্থা আছে। এই গ্যাস নীল শিখায় জ্বলে। এটিকে রান্নার কাজেও ব্যবহার করা যায়। প্লান্টের আশপাশে যে গ্যাসের আলো আছে তা এই গ্যাসে জ্বলে। গ্যাসের আদর্শ ব্যবহার অবশ্য ক্যান্টিনে। প্লান্টে উৎপন্ন সার উন্নত মানের এবং চাষের কাজে ব্যবহার করা যায়।
রান্নাঘরের বর্জ্য পদার্থকে কী ভাবে পৃথকীকরণ করা হচ্ছে তার উপর এই এই জৈবগ্যাস প্লান্টের সাফল্য নির্ভর করছে। মসৃণ ভাবে এই প্লান্ট চালানোর অন্তরায় হল প্লাস্টিকের টুকরো, হাড়ের টুকরো, নারকেলের খোল ও ছোবড়া, পেঁয়াজের খোসা, ডিমের খোসা। ক্যান্টিনের বর্জ্য পদার্থ ফেলার জায়গায় প্রায়ই স্টিলের বাসন পাওয়া যায়, যেমন ডিশ বা চামচ। হাড়, খোলা ও খোসা এবং বাসন যেমন মিক্সারের শারীরিক ক্ষতি করতে পারে তেমনই পেঁয়াজের খোসা, ছোবড়া, প্লাস্টিক প্রভৃতি মূল ট্যাঙ্ক ও প্রিডাইজেস্টরের ভিতরের জৈবনিক প্রক্রিয়ার উপর উল্টো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে, যা প্লান্টের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকর।
সূত্র : DAE
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/26/2020