সহজ কথায়, কোজেনারেশন মানে হল একটি জ্বালানি ব্যবহার করে পর্যায়ক্রমে একাধিক ধরনের শক্তি উৎপাদন করা। বাষ্প ও বিদ্যুতের কোজেনারেশনের মাধ্যমে শিল্পক্ষেত্রে জ্বালানির সার্বিক ব্যবহারের দক্ষতা বাড়ে। কোজেনারেশনের ন্যূনতম শর্ত হল সঠিক অনুপাতে তাপ ও বিদ্যুৎ একই সঙ্গে পাওয়া। চিনি শিল্পের ক্ষেত্রে যে চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের সময় কম তাপমাত্রায় প্রচুর পরিমাণ তাপ বেরিয়ে যায়। সাধারণ বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলিতে এই তাপ বর্জন কনডেনসারের মধ্যে হয় যেখানে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত তাপ বায়ুমণ্ডলে মিশে যায়। কোজেনারেশন পদ্ধতিতে এই তাপ নষ্ট হয় না এবং তাপক্রিয়ায় তা কাজে লাগে। দেশের চালু চিনি কলগুলি থেকে কোজেনারেশন পদ্ধতিতে অতিরিক্ত ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যেতে পারে।
এই প্রকল্পে প্রধান যে যন্ত্র লাগে তা হল উচ্চ চাপে ছিবড়ে জ্বালানোর বয়লার, বাষ্পচালিত টার্বাইন এবং গ্রিড ইন্টারফেজিং ব্যবস্থা। এর সব কটাই স্থানীয়ভাবে তৈরি করা যায়।
এভাবে জ্বালানির দক্ষ ব্যবহার ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো যায়। কোনও কোনও ক্ষেত্রে তার বেশিও করা সম্ভব। কোজেনারেশন পদ্ধতিতে কয়েক কিলোওয়াট থেকে বহু মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। একই সঙ্গে একশোর কম কিলোওয়াট-থার্মাল থেকে বহু মেগাওয়াট-থার্মাল তাপ উৎপাদন করা সম্ভব।
চিনিকলে ব্যবহৃত ছিবড়ে-নির্ভর কোজেনারেশন প্রকল্পের খরচ প্রতি মেগাওয়াটে ৩ থেকে ৪ কোটি টাকা। চিনিকলে আখ মাড়াইয়ের কাজ বছরে গড়ে ১৬০ দিন চলে ধরে নিলে এখানে কোজেনারেশন পদ্ধতির মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বিনিয়োগ করলে তার ফল লাভজনক হতে পারে।
সূত্র : নতুন ও পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি মন্ত্রকের প্রকাশিত পুস্তিকা
সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/14/2019