ভারতের দক্ষিণের দক্ষিণ কর্ণাটকের কাবিগেরে গ্রামে সবুজের কোনও অভাব নেই। এই গ্রামের যে বিশেষত্ব অন্যের চেয়ে একটু আলাদা ধরনের তা হল ভারতের এই প্রথম একটি গ্রাম পঞ্চায়েত পাওয়ার গ্রিডে বিদ্যুৎ বিক্রি করে।
কাবিগেরে গ্রাম পঞ্চায়েত তার নিজস্ব জৈবভর বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ২ টাকা ৮৫ পয়সা প্রতি কিলোওয়াট দরে ব্যাঙ্গালোর ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানিকে বিক্রি করে। গ্রামীণ ভারতে জৈবভর থেকে শক্তি উৎপাদন - ইউএনডিপির এই কর্মসূচির অধীনে কাবিগেরে গ্রামে এই অভিনব উদ্যোগের সূত্রপাত। গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফেসিলিটি, ইন্ডো-কানাডা এনভায়রনমেন্ট ফেসিলিটি এবং কর্ণাটক সরকারের গ্রামোন্নয়ন ও পঞ্চায়েতি রাজ দফতরের যৌথ উদ্যোগে কাবিগেরে গ্রামে এই প্রকল্পটি রূপায়িত হয়েছে।
স্থানীয় ভাবে প্রস্তুত জৈবভর থেকে তিনটি ইউনিটের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। এই ইউনিটগুলি যথাক্রমে ২৫০, ২৫০ ও ৫০০ কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন। ২০০৭ থেকে প্রায় ৪ লক্ষ কিলোওয়াট-আওয়ার বিদ্যুৎ তারা তৈরি করেছে। অর্থাৎ গ্রাম ভারতের ৬ হাজার পরিবারে বছরে যতটা বিদ্যুৎ লাগে ততটা। এ ভাবেই ওই এলাকায় বিশ্বস্ত বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা করেছে। কাবিগেরে গ্রামের এই বিদ্যুৎকেন্দ্র শুধু বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাত্রা বাড়িয়েছে তা-ই নয়, পরিবেশেরও বিপুল উপকার করছে। বায়োমাস বা জৈবভর সংগ্রহ করা হয় স্থানীয় ভাবে বেড়ে ওঠা ইউক্যালিপটাস ও অন্যান্য গাছের পাতা থেকে। ইউক্যালিপটাসের ক্রমবর্ধমান চাহিদা এলাকায় সবুজের পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
কাবিগেরে গ্রাম কমিটির প্রধান সিদ্দাগাঙ্গম্মা বক্তব্য, ‘‘আমাদের চার পাশটা কতটা বদলে গিয়েছে তা ভাবতে অবাক লাগে। আমাদের গ্রামে শুধু সবুজ বেড়েছে তা-ই নয়, বিদ্যুৎ সরবরাহ অনেকটাই সুনিশ্চিত হয়েছে আর রান্নার জন্য পাচ্ছি পরিষ্কার জ্বালানি।’’
২৫ বছরের যুবতী রাঙ্গাম্মার কাছে পরিবর্তন মানে সে এখন অনেক বেশি সময় তার স্বামীর সঙ্গে কাটাতে পারে। “আমার স্বামী খুবই খুশি। এখন আর তাকে প্রতি দিন জঙ্গলে গিয়ে কাঠ আনতে হয় না। তার হাতে এখন বেশি টাকা এবং সময় – দু’টোই এসেছে।” হাসতে হাসতে রাঙ্গামা বলে চলে, “এখন আমার রান্না করতে খুব ভাল লাগে। ধোঁয়ায় দমবন্ধ করে দেওয়ার পরিবেশটা এখন আর নেই।”
সূত্র: কনটেন্ট মানেজমেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 10/29/2019
কর্ণাটকের কাবিগেরে গ্রাম জৈবভরের বিদ্যুৎকেন্দ্র বস...