সৌরশক্তির ক্ষমতা নিয়ে এখন আর মানুষের মনে সন্দেহ নেই৷ এ জন্য দিন দিন বাড়ছে এর ব্যবহার। বিজ্ঞানীরা সৌরশক্তি দিয়ে বিমান চালানোরও চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আর ইউরোপের দেশ বেলজিয়ামে শুরু হয়েছে সৌরশক্তির আরেক ব্যবহার।
পরিবেশ-বান্ধব হিসেবে বেলজিয়ামের রেল ব্যবস্থার এমনিতেই বেশ নাম রয়েছে। এ বার তার সঙ্গে যোগ হল ‘সোলার টানেল'। দৈর্ঘ্যে যেটি প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার লম্বা। এই টানেলের উপর বসানো হয়েছে ১৬ হাজার সৌর প্যানেল, যেখান থেকে বছরে উৎপাদিত হবে প্রায় ৩ গিগাওয়াট-আওয়ার বিদ্যুৎ। এই বিদ্যুৎ দিয়ে প্রায় এক হাজার বাড়ির এক বছরের চাহিদা মেটানো যাবে।
কিন্তু সোলার টানেলের এই বিদ্যুৎ ঘরবাড়িতে নয়, ব্যবহার করা হচ্ছে রেল ব্যবস্থায়। যেমন পার্শ্ববর্তী ব্যস্ত রেল স্টেশন ‘আন্টভের্প'-এর আলোক ব্যবস্থা ও গরম রাখার কাজ চলছে এই বিদ্যুৎ দিয়ে। এ ছাড়া চলছে সিগন্যালিং-এর কাজও। এ সব ছাড়াও বছরে প্রায় চার হাজারটি ট্রেন পুরোপুরি চলতে পারবে সোলার টানেলের বিদ্যুৎ দিয়ে।
এতে প্রতি বছর প্রায় ২৪০০ টন কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমন কমবে বলে জানা গেছে। অর্থাৎ বেশ পরিবেশ-বান্ধব একটি প্রকল্প এটি।
মাত্র দু’ মাস আগে অর্থাৎ জুন মাসে প্রকল্পটি চালু হয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে চারটি প্রতিষ্ঠানের নাম। এগুলো হলো বেলজিয়ামের রেল ব্যবস্থার পরিচালক সংস্থা ইনফ্রাবেল, নবীকরণযোগ্য জ্বালানি উৎপাদক কোম্পানি ইনফিনিটি এবং ব্রাশসাট ও শোটেন শহর কর্তৃপক্ষ। খরচ হয়েছে প্রায় ১৬৫ কোটি টাকা।
ইনফিনিটি বলছে সোলার টানেলের কারণে প্রায় ৩০ ভাগ কম দামে বিদ্যুৎ পাচ্ছে রেল সংস্থা ইনফ্রাবেল। কারণ টানেল থেকে বিদ্যুৎ সরাসরি ব্যবহৃত হবে রেল ব্যবস্থায়। ফলে মাঝে কোনও গ্রিড পরিচালনাকারী সংস্থা থাকছে না। এ কারণে যে অর্থ ব্যয় করে সোলার টানেল বানানো হয়েছে সেটা আগামী নয় বছরের মধ্যেই উঠে আসবে বলে মনে করছেন প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা।
টানেলে যে সৌর প্যানেল বসানো হয়েছে সেগুলো তৈরি করেছে চীনা কোম্পানি ‘জিঙ্কো সোলার'৷ ইনফিনিটি বলছে ইউরোপীয় কোম্পানিগুলোর চেয়ে চিনা কোম্পানিকে কাজ দেওয়াটা তাদের জন্য লাভজনক হয়েছে৷
সূত্র : জাহিদুল হক, ডিডাবলু ওয়েবসাইট
সর্বশেষ সংশোধন করা : 7/5/2020