ডিএফও অরুণ মুখোপাধ্যায় জানান, বন দফতরের অনুমোদনের পর মাস তিনেক আগেই আমরা রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর থেকে ওষুধগুলির তৈরির ড্রাগ লাইসেন্স পাই। রীতিমতো ফার্মাসিস্ট, বিশেষজ্ঞদের রেখে ট্যাবলেট তৈরি হচ্ছে। আপাতত পেটের জন্য দু’টি ওষুধ বাজারে আনা হয়েছে। ঠান্ডা বা কাশির জন্য কাফহিল ছাড়াও আরও কিছু দ্রুত বাজারে আসবে। আমাদের অনুমোদিত আউটলেট ছাড়াও অনলাইনে ওষুধগুলিও মিলবে। অত্যন্ত ন্যায্যমূল্যে ৫০টি করে ট্যাবলেট বোতলজাত করা হয়েছে।
বন দফতরের জঙ্গল, বন্যপ্রাণের বাইরের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ১৯৬৬ সালে মাইনর ফরেস্ট প্রোডিউস ডিভিশন তৈরি হয়। যা ১৯৯৮ সালে এনটিএফপি হিসাবে নামকরণ করা হয়। বাঁশ, বেত, সিট্রেনলা সংক্রান্ত নানা কাজ শুরু হলেও পরে ডিভিশনের পরিধি বাড়ানো হয়। মধু, হলুদ ও আদাগুঁড়ো বাজারে আসে। সেই সঙ্গে ফিনাইল, সিট্রেনলা তেল, হ্যান্ড ওয়াশ, ডিস ওয়াশ-সহ একাধিক পণ্য বাজারে একের পর এক আসতে থাকে। ত্রিফলা, আমলকি, অশ্বগন্ধা, গুরমার, বেল, বাসক, কালমেঘ-সহ প্রায় ৪৫ ধরনের ভেষজ গুঁড়োও তৈরি হয়। আসে ভেষজ চা-ও। এর পরে দু’ বছর আগে যোগ হয় পার্সোনাল কেয়ার প্রোডাক্টও। বনজ ব্র্যান্ডে তৈরি মাথার তেল, বাম, সানস্ক্রিন লোশন, ফেয়ারনেস ক্রিম, ময়েসচারাইজার, গোলাপ জল এখন বহু দোকান এবং পার্লারে ব্যবহার করা হয়।
বন দফতরের কয়েক জন অফিসার জানিয়েছেন, উত্তরবঙ্গের বন বাংলো থেকে রিসর্ট সর্বত্র ওই জিনিসপত্রের ব্যবহার হয়। আর আর্য়ুবেদিক জিনিসপত্রের চাহিদা উত্তরবঙ্গে দিনের পর দিন বাড়ছে। নানা প্রান্তে বিভিন্ন বহুজাতিক সংস্থা বড়বড় স্টোর, শোরুম করছে। সে ক্ষেত্রে পরিকাঠামো থাকায় বন দফতর আর পিছিয়ে থাকতে চায়নি। কলকাতা থেকে বিভিন্ন সেকশনের বিশেষজ্ঞদের এনে প্রোডাক্টগুলি তৈরি হচ্ছে। ইতিমধ্যে ৫০ জনের উপর ডিলারও নিয়োগ করা হয়েছে।
ডিএফও জানান, সম্প্রতি আমরা রাজ্য সরকারের ‘বিশ্ববাংলা’-র সঙ্গে চুক্তি করেছি। কলকাতা বিমানবন্দর, দক্ষিণাপণের স্টোরে আমাদের প্রোডাক্ট বিক্রি হবে। চলতি সপ্তাহেই সেখানে মালপত্র পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া অনলাইনে দিল্লি, হরিয়ানা, মেঘালয়, অন্ধ্রপ্রদেশেও যাচ্ছে। এর পরে অশ্বগন্ধা, গুরমার, ত্রিফলাকে সামনে রেখে আরও কিছু ট্যাবলেট তৈরি হবে। চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৪।
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/16/2020