মনে হতে পারে আয়ুর্বেদিক ওষুধ নিয়ে এত ভাবনা চিন্তার কী আছে, ক’জনই বা আয়ুর্বেদিক ওষুধ ব্যবহার করে? উত্তর হচ্ছে, বিকাশশীল দেশগুলির ৮০ শতাংশের বেশি মানুষ স্বাস্থ্যের প্রয়োজনে আয়ুর্বেদিক ওষুধের উপর নির্ভরশীল। এমনকী আমেরিকা, ব্রিটেন বা ফ্রান্সের মতো উন্নত দেশেও ৫০ শতাংশেরর মতো মানুষ কখনও না কখনও আয়ুর্বেদিক ওষুধ ব্যবহার করেছেন। এই পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট চিরায়ত জ্ঞান ভাণ্ডার কী ভাবে উত্তরোত্তর গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।
ভারতের কাউন্সিল অব সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ (সিএসআইআর) এবং ডিপার্টমেন্ট অব আয়ুর্বেদ, যোগ অ্যান্ড নেচারোথেরাপি, ইউনানি অ্যান্ড সিদ্ধা অ্যান্ড হোমিওপ্যাথি (আয়ুষ)–এর যৌথ উদ্যোগের ফসল এই ডিজিটাল লাইব্রেরি। এই লাইব্রেরিতে প্রায় ২২,৬০,০০০ ওষুধের ফর্মুলা লিপিবদ্ধ করা আছে। শুধু লিপিবদ্ধ করাই নয়, সারা পৃথিবীর পেটেন্ট কর্তৃপক্ষের কাছে যাতে এগুলি বোধগম্য হয় সে জন্য এগুলিকে ইংরেজি, ফরাসি, জার্মান, জাপানি, স্প্যানিশে অনুবাদ করেও দেওয়া হয়েছে। যে সমস্ত গাছগাছড়া থেকে এগুলি তৈরি সেই সব গাছের বোটানিক্যাল নামও উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে।
ডিজিট্যাল লাইব্রেরি তৈরি করলেই কাজটা শেষ হয়ে যায় না। এমন ভাবে সেটা ব্যবহার করা দরকার যাতে তা সবার কাছে উন্মুক্তও না হয়ে যায় অথচ বিভিন্ন দেশের পেটেন্ট কর্তৃপক্ষ কোনও নতুন পেটেন্ট মঞ্জুর করার আগে এই তথ্য ভাণ্ডারে চোখ বুলিয়ে নিতে পারেন। এই উদ্দেশ্যে, তথ্য ভাণ্ডারটি তৈরির পর, ভারত বিভিন্ন দেশের পেটেন্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটি ‘টিকেডিএল অ্যাকসেস এগ্রিমেন্ট’ স্বাক্ষরে উদ্যোগী হয়েছে। এই চুক্তিতে যারা সই করবে তারা নতুন পেটেন্ট আবেদন পরীক্ষার জন্য তথ্য ভাণ্ডার ঘাঁটতে পারবে এবং কোনও পেটেন্ট বাতিল করার পর আবেদনকারী সেই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করেল তাকে তথ্য ভাণ্ডারের যে তথ্যের ভিত্তিতে আবেদন বাতিল করা হয়েছে সেই তথ্যটি দেখাতে পারবে। ২০১১ সাল পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জার্মানি, ব্রিটেন, আমেরিকা ও ইউরোপিয়ান পেটেন্ট অফিসের সঙ্গে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।
সর্বশেষ সংশোধন করা : 4/23/2020