অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

কেন যোগাসন

ডা. দিব্যসুন্দর দাস

দেহ মনে সংযোগ স্থাপন ও উন্নয়ন যোগাসনের মুখ্য উদ্দেশ্য। যোগাসন অনুশীলনের প্রবণতা ও একনিষ্ঠ অভ্যাস এই উদ্দেশ্য পূরণের সহায়ক। নিয়মিত যোগাসন অভ্যাসের ফলে আমাদের দেহের পুষ্টিসাধন হয়। কী ভাবে দেহে বিভিন্ন ক্রিয়া সাধিত হয়, কীসের মাধ্যমে কী ভাবে দেহ পুষ্টি লাভ করে, সেই দেহ সম্বন্ধে সামান্য কিছু প্রত্যেকের জেনে রাখা দরকার। মাংসপেশি, অস্থি, গ্রন্থি, স্নায়ু, লিভার, পাকস্থলী, হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস প্রভৃতি দেহের কোন স্থানে কোনটির অবস্থান, কী রকম দেখতে, যা চোখে দেখা যায়, তা অ্যানাটমির মাধ্যমে জানতে পারি। সংক্ষেপে ছবির মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে, আমরা কী ভাবে শ্বাস গ্রহণ করি, যে খাদ্য খাই তা কী ভাবে দেহের পুষ্টি জোগায়, কী ভাবে রক্ত গঠন হয় এবং দেহে প্রবাহিত হয়, দূষিত পদার্থ কী ভাবে শরীর থেকে বেরিয়ে আসে। ফিজিওলজির মাধ্যমে এ সব বিষয়ে অবহিত হওয়া যায়। ফিজিওলজিতে দেহকে নয়টি সিস্টেমে ভাগ করা হয়েছে। শরীরের নয়টি দেহতন্ত্র বা সিস্টেমের কার্যক্ষমতা সুষ্ঠু ভাবে পরিচালিত হয়ে দেহ নীরোগ ও প্রাণপ্রাচুর্যে পরিপূর্ণ হয়। এই নয়টি দেহতন্ত্র ও তাদের কাজ এই প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য।

  • ১) হেমোপয়েটিক সিস্টেম (রক্তের উপাদান ও তার গঠনতন্ত্র) : রক্তের প্রধান কাজ দেহে শ্বাসপ্রশ্বাস, পুষ্টি, ও হরমোন প্রবাহিত রাখা ও অপ্রয়োজনীয় জিনিস শরীর থেকে নিষ্কাশন করা।
  • ২) সার্কুলেটরি সিস্টেম (রক্ত সংবহন তন্ত্র) : এতে হৃৎপিণ্ড ও দেহে রক্ত সঞ্চালন প্রণালী বর্ণিত।
  • ৩) রেসপিরেটরি সিস্টেম (শ্বসনতন্ত্র) : নাক ও দু’টি ফুসফুস অবলম্বনে শ্বাসের ক্রিয়া বৈচিত্র্য।
  • ৪) ডাইজেসটিভ সিস্টেম অ্যান্ড মেটাবলিজম (পরিপাকতন্ত্র ও সুবন্টন পদ্ধতি) : আহার্য দ্রব্য পরিপাক ও দেহের বিভিন্ন অংশে খাদ্যরসের সুবন্টন ক্রিয়া।
  • ৫) এক্সক্রিটরি সিস্টেম (রেচনতন্ত্র) : স্বাভাবিক ভাবে শরীরের মল, মূত্র ও ঘর্ম ত্যাগের বিবরণ।
  • ৬) এন্ডোক্রিন অ্যান্ড রিপ্রোডাক্টিভ সিস্টেম (নালিবিহীন গ্রন্থি ও জননতন্ত্র) : পিটুইটারি, থাইরয়েড, প্যারাথাইরয়েড, সুপ্রারিনাল, সেক্স প্রভৃতি গ্ল্যান্ডের ক্ষরণ বৈচিত্র ও দেহ ধর্মের প্রকাশও এই প্রণালীতে থাকে।
  • ৭) স্কেলিট্যাল সিস্টেম (অস্থিতন্ত্র) : শরীরের অস্থির যথাযোগ্য সংস্থাপন ও হাড়ের গঠন বর্ণনা।
  • ৮) মাসকুলার সিস্টেম (পেশিতন্ত্র) : দেহের মাংশপেশির যথাযোগ্য সংস্থাপন।
  • ৯) নার্ভাস সিস্টেম অ্যান্ড স্পেশাল সেন্সেস (স্নায়ুতন্ত্র ও বিশেষ অনুভূতি) : শরীরে স্নায়ুর কাজ নিয়ে আলোচনা ও স্বাদ, গন্ধ, দর্শন, শ্রবণ, স্পর্শ প্রভৃতি ইন্দ্রিয় ধর্মের বর্ণনা।

নিয়মিত যোগাসন অভ্যাসের ফলে এই সকল তন্ত্রের সুস্থতা ও দৃঢ়তা অক্ষুণ্ণ থাকে। শারীরিক, মানসিক পরিশ্রমে ও দুশ্চিন্তায় প্রতি দিন আমাদের যে জীবনশক্তি ক্ষয় হয় তা নিয়মিত যোগাসন অভ্যাসে পুনরায় সঞ্চিত হয়। ফলে যোগাসন নীরোগ ও সবল দেহ, রূপ, যৌবন, আয়ু প্রভৃতিকে দীর্ঘস্থায়ী করতে সাহায্য করে, রক্তে হিমোগ্লোবিন ও অক্সিজেনের মাত্রা অধিক পরিমাণে বৃদ্ধি পায় বলে দেহের রোগ প্রতিষেধক শক্তি বাড়ে। দেহ জীবনীশক্তিতে পরিপূর্ণ হলে আলস্যমুক্ত কর্মক্ষমতা অর্জন করে মানুষ শারীরিক ও মানসিক স্বাচ্ছন্দ্য লাভ করে।

যোগাসন সম্পূর্ণ বিজ্ঞানভিত্তিক ও ব্যায়াম থেকে পৃথক এবং চল্লিশোর্ধ্ব বয়সের পুরুষ ও মহিলাদের পক্ষে সর্বোৎকৃষ্ট। দৈনিক যোগাসন অভ্যাসে মেরুদণ্ডের নমনীয়তা এবং স্থিতিস্থাপকতা বাড়ে। এতে মেরুদণ্ডে ছয়টি স্নায়ুকেন্দ্রে প্রবল জীবনীশক্তি সঞ্চারিত হয়। মনে গভীর আত্মপ্রত্যয়, আনন্দ এবং সুদৃঢ় ইচ্ছাশক্তি সঞ্চারিত হয়। আলাদা করে ওষুধ খাবার দরকার হয় না। সুতরাং প্রত্যেক মানুষের পক্ষে যোগাসন একান্ত বাঞ্ছিত কল্পতরু।

ব্যধির মন্দির যেন, এই মানব শরীর

নিরাময়ে যোগ করো, না হয়ে অধীর।

সর্বশেষ সংশোধন করা : 5/19/2020



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate