সচেতনা তৈরির জন্য হাসপাতালের দেওয়ালে নানা স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড ঝোলানো। তার একটিতে লেখা ‘নাই বা হল একটাও ছেলে/মেয়েরাই দেবে কপাল খুলে’। এই স্লোগানের গুরুত্ব কতটা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসা মহিলাদের ভিড় সেটা বলে দিচ্ছে। কথা বলতে বলতে ফরিদা বিবিও বললেন, ‘মেয়েদের তো হাজারো রোগ। পেটের ভাত জোগাড় করতে হিমসিম অবস্থা। ঘর-বাইরে আর বাচ্চা সামলে নিজের শরীরের কথা ভাববার সময় কোথায়।’ তবে শুধু স্লোগান নয়, মেয়েদের স্বনির্ভর করে তোলারও উদ্যোগ নিয়েছে আগরহাটি শ্রী রামকৃষ্ণ মা সারদা স্বাস্থ্য সেবা পরিষদ। গ্রামের মেয়েদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ছ’মাসের নার্সিং কোর্স চলছে। সংস্থাটি গ্রামের মানুষকে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর উপর জোর দেওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিমা করার উপর জোর দিয়ে প্রচার চালাচ্ছে। তাদের উৎসাহী করে তোলার জন্য রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্যবিমা যোজনায় ১৫০০ গ্রামবাসী প্রিমিয়াম দিয়েছে।
দুপুর দুটো। প্রচণ্ড ব্যস্ততা হাসপাতালের সমস্ত বিভাগের ঘরগুলোতে। অনেক আগেই কলকাতা থেকে ডাক্তারবাবুরা এসে পড়েছেন। রোগী দেখছেন। কোথাও কোনও সমস্যা রয়েছে কিনা দ্রুত পায়ে ঘরগুলোতে ঘুরে দেখে নিচ্ছেন সেবানন্দ মহারাজ। আর এক জন মধ্যবয়সি মহিলা নীরবে ঘরগুলোর পাশ দিয়ে হেঁটে চলছেন। ঘরের সামনে লাইনে দাঁড়ানো মানুষদের সঙ্গে কথা বলছেন। সমস্যা থাকলে সমাধানের চেষ্টা করেছেন। নাম কেয়া মুখার্জি। বাড়ি কলকাতার নাকতলায়। কাক ভোরে উঠে তিনিও বাড়ির কাজ সেরেছেন। সংসারের ভার পুত্রবূধদের হাতে ছেড়ে দিয়ে ঠিক সকাল সাতটায় পৌঁছে গেছেন বেলভিউতে। তার পর সেখান থেকে চিকিৎসক টিমের সঙ্গে সোজা আগরহাটির এই আশ্রমে। মানুষের সেবা করাটা তাঁর নেশা। সেই নেশায় মদত দিয়েছে আগরহাটি শ্রী রামকৃষ্ণ মা সারদা স্বাস্থ্য সেবা পরিষদের এই চিকিৎসা শিবির। তার কথায়, ‘মানুষের সেবা করা মানেই তো ঈশ্বরের সেবা করা।’
সূত্র : পোর্টাল টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 3/2/2020