অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

শহরে শুরু প্লাজমা চিকিৎসা, প্রথমে পিজি

শহরে শুরু প্লাজমা চিকিৎসা, প্রথমে পিজি

অক্সিজেন এবং আর্গন গ্যাসের মিশ্রণে তৈরি হয় আয়োনাইজড গ্যাস বা প্লাজমা। ত্বকের জটিল সংক্রমণ, ত্বকের ক্যানসার, ডায়াবেটিসের ফলে হাত ও পায়ে হওয়া ঘা, কুষ্ঠ রোগ এবং রক্ত জমাট না-বাঁধার মতো সমস্যা প্লাজমা দিয়ে চিকিৎসায় সেরে যেতে পারে বলে মনে করেন গবেষকদের একটি বড় অংশ। শহরে এসএসকেএম হাসপাতালে এ বার রোগীদের উপরে এই প্লাজমার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হচ্ছে।

ভারত সরকারের পারমাণবিক শক্তি দফতরের দেওয়া ২০ লক্ষ টাকায় যৌথ ভাবে এই কাজ করছেন শিবপুরের ‘বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সায়েন্স ইউনির্ভাসিটি’ (বেসু)-র পদার্থবিদ এবং এসএসকেএমের চিকিৎসকেরা। তিন বছর ধরে এই কাজ চলছে। প্রাথমিক ভাবে ত্বকের জটিল সংক্রমণে আক্রান্ত তিন জন রোগীকে বাছাই করা হয়েছে। তিন জনই পুরুষ, বাঙালি এবং কলকাতার বাসিন্দা। তাঁরা লিখিত ভাবে সম্মতিও দিয়েছেন। তাঁদের উপরে প্রথম এই প্লাজমা-চিকিৎসা প্রয়োগ করা হবে। আর রক্ত জমাট বাঁধতে প্লাজমা কতটা সাহায্য করতে পারে, তা পরীক্ষার জন্য ব্যবহৃত হবে এসএসকেএমের ব্লাডব্যাঙ্কে সংগৃহীত রক্ত। গবেষকদের মতে, হিমোফিলিয়ার রোগীদের রক্ত সহজে জমাট বাঁধে না। অনেক সময়ে দুর্ঘটনায় গুরুতর আহতের দেহ থেকে অতিরিক্ত রক্তপাতে তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এই সব ক্ষেত্রে প্লাজমা নতুন দিশা দেখাতে পারে।

মানুষের উপরে কোনও চিকিৎসার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্য সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ’ অনুমোদিত এথিক্যাল কমিটির সম্মতির দরকার। এসএসকেএম হাসপাতালের ৯ সদস্যের এথিক্যাল কমিটির কাছে বিষয়টি বিবেচনার জন্য এসেছিল গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে। একাধিক বার আলাপ-আলোচনার পরে সম্প্রতি এই পরীক্ষামূলক প্রয়োগের অনুমতি দেয় কমিটি। ফলে রোগীদের উপরে প্লাজমা প্রয়োগে আর কোনও বাধা নেই।

এই প্রকল্পের প্রধান দুই গবেষক বেসুর পদার্থবিদ অভিজিৎ মজুমদার এবং এসএসকেএমের অধ্যক্ষ প্রদীপ মিত্র। তাঁদের দাবি, এই পরীক্ষায় রোগীদের দেহে কোনও বিরূপ প্রতিক্রিয়ার বা যন্ত্রণার সম্ভাবনা নেই এবং খরচও কম।

তাঁরা আরও ব্যাখ্যা দিয়েছেন, প্লাজমা গ্যাসের মধ্যে থাকা আর্গন আর রি-অ্যাক্টিভ অক্সিজেন এক দিকে যেমন ত্বকে সংক্রমণ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াগুলিকে মারে, তেমন রক্ত থেকে হাইড্রোজেন কেড়ে নিয়ে রক্ত জমাট বাঁধায়। প্রদীপবাবু জানান, যে তিন জনের ত্বকের চিকিৎসা হবে তাঁদের টানা এক মাস এক দিন অন্তর ৫-১০ মিনিট ধরে ক্ষতস্থানে প্লাজমা প্রয়োগ করা হবে। প্লাজমার তাপমাত্রা থাকবে ৩০-৬০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের মধ্যে। এর জন্য তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি থাকার প্রয়োজন নেই। বাড়ি থেকে আসা-যাওয়া করলেই হবে। পরবর্তীকালে সোরিয়াসিস, কুষ্ঠ বা ত্বকের ক্যানসারের রোগীদের এক মাস প্রতি দিন ১০-১৫ মিনিট ক্ষতস্থানে প্লাজমা প্রয়োগ করা হবে এবং প্লাজমায় অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া হবে। গবেষকদের কথায়, বাণিজ্যিক ভাবে প্লাজমার মাধ্যমে চিকিৎসা শুরু হলে প্রতি সিটিংয়ে মাত্র ২০-৩০ টাকা খরচ করতে হবে রোগীকে।

অভিজিৎবাবু জানিয়েছেন, জার্মানির ‘ইউনিভার্সিটি অব গ্রাইফসওয়াল্ড’-এ পদার্থবিদ্যা বিভাগে গবেষণার দরুন তিনি ইকোলাই ব্যাকটেরিয়ার উপরে প্লাজমা প্রয়োগ করেছিলেন। তাতে ৯৬% ব্যাকটেরিয়া মারা গিয়েছিল। ২০০৯ সালে ‘জার্নাল অব অ্যাপ্লায়েড ফিজিক্স’-এ এই গবেষণার কথা প্রকাশিত হয়। এর পরে তাঁরা ওই বিশ্ববিদ্যালয়েই স্টেফালো কক্কাস ও নাকে ঘা-সৃষ্টিকারী এক ধরনের ব্যাকটেরিয়ার উপরে প্লাজমা প্রয়োগ করেন। তাতে ৯০% ব্যাকটেরিয়া মারা যায়। এটি প্রকাশিত হয় ২০১২ সালে ‘জার্মান ডারমাটোলজিক্যাল সোসাইটি’-র জার্নালে। পরবর্তীকালে ভারত সরকারের পারমাণবিক শক্তি দফতরের কাছে তিনি মানুষের উপরে প্লাজমা চিকিৎসা প্রয়োগের জন্য আর্থিক অনুদান চান। সেই অনুমতি পেতে দেরি হয়নি।

সূত্র : পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়, আনন্দবাজার পত্রিকা, ৭ মার্চ ২০১৫

সর্বশেষ সংশোধন করা : 3/2/2020



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate