ক্যান্সার সংক্রামক : ক্যান্সার সংক্রামক রোগ নয়। এটি ফ্লু বা ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো ছড়িয়ে পড়ে না। এটিকে একটি সংক্রামক বা ছোঁয়াচে রোগ হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয় না।
ক্যান্সার বংশগত : সাধারণত ক্যান্সার আপনার জীবনশৈলীর (কীভাবে জীবন যাপন করছেন) তার উপর নির্ভর করে । অ্যালকোহল, তামাক, নির্দিষ্ট কতগুলো রাসায়নিক পদার্থ, জীব ও উদ্ভিদের শরীরে উৎপন্ন বিষ (টক্সিন), হরমোনজনিত বিশৃঙ্খলতার কারণে ক্যান্সার ঘটতে পারে।
নিয়মিত চেক আপ ও আজকের চিকিৎসা-প্রযুক্তি গোড়ার দিকে সব প্রকারের ক্যান্সার সনাক্ত করতে পারে : যদিও নিয়মিত ডাক্তারী যত্ন ও চিকিৎসা গোড়ার দিকে ক্যান্সার সনাক্ত করতে পারে, তবে নিরাময়ের কোনো নিশ্চয়তা প্রদাণ করে না। বেশীর ভাগ ক্যান্সারকে গোড়াতেই সনাক্ত করা যায়, তবে কিছু কিছু ক্যান্সার মৃত্যু পর্যন্ত অসানাক্ত থেকেই যায়।
শরীরের একটি অংশ বা অঙ্গ থেকে আর একটিতে বিচরণের কারণে, সুচ-বায়োপসি (নিডল বায়োপসি) বা বায়োপসি (রোগনির্ণয়ের বা পরীক্ষার জন্য জীবদেহ থেকে কোষকলা কেটে বা চেঁচে নেওয়া) পদ্ধতি ক্যান্সার কোষকে বিশৃঙ্খল করতে পারে : বেশির ভাগ ক্যান্সারে সুচ বায়োপসির ফলে ক্যান্সার কোষের ছড়িয়ে পড়ার কোনো প্রমাণ নেই।
কারুর ক্যান্সার হলেই তার চিকিৎসা আছে /সব প্রকার ক্যান্সারেরই চিকিৎসা আছে : ডাক্তারী পরামর্শ ও বিকল্প পথ জেনে নেওয়ার পর কোনো ব্যক্তি চিকিৎসার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। ক্যান্সার আক্রান্ত কোন ব্যক্তির মধ্যে ক্যান্সারের কোনো চিহ্ন বা লক্ষণ নাও দেখা দিতে পারে এবং কোনো কোনো ব্যক্তির ক্যান্সারের শেষ পর্যায়ে ডাক্তারবাবু একমাত্র ব্যথা বা যন্ত্রণা উপশমের পরামর্শ দিতে পারেন।
ক্যান্সার সবসময়ের জন্য যন্ত্রণাদায়ক : কিছু কিছু ক্যান্সারে কোনো যন্ত্রণাই থাকে না, যা সম্পূর্ণ যন্ত্রণাবিহীন। রোগীর সন্তুষ্টির জন্য ডাক্তারবাবু এক্ষেত্রে মিছেমিছি যন্ত্রণা নিরসনের ওষুধ দিয়ে ভুলিয়ে রাখেন, ফলে রোগীর দৈনন্দিন জীবনযাপনে এর একটা সুপ্রভাব পড়ে।
বেশীরভাগ ডেলা বাঁধা স্তন (ব্রেস্ট ল্যাম্প) ক্যান্সার-সৃষ্টিকারী : বেশীরভাগ ডেলা বাঁধা স্তন ক্যান্সার-সৃষ্টিকারী নয়। মহিলাদের এক্ষেত্রে লজ্জা না পেয়ে স্তনে এই ধরণের কোনো পরিবর্তন দেখা দিলে আগাম সুবিধার জন্য ডাক্তারী পরামর্শ নেওয়া উচিত। লাম্পটি ক্যান্সার-সৃষ্টিকারী কিনা জানার জন্য আপনার ডাক্তার আপনাকে ম্যামোগ্রাম, আল্ট্রাসাউন্ড অথবা বায়োপসি করতে বলতে পারেন।
স্তন-রোপন (ব্রেস্ট ইমপ্লান্টস) ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় : যে সমস্ত মহিলারা ব্রেস্ট ইমপ্লান্ট করিয়েছেন তাঁদের ব্রেস্ট ক্যান্সার হওয়ার সেরকম বড় কোনো ঝুঁকি নেই। ম্যামোগ্রামে ক্যান্সার নির্ণয় সবসময় ঠিকঠাক নাও হতে পারে তাই এর সঙ্গে সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে স্তন সমস্যা নির্দ্ধারাণে এক্স -রে করে নেওয়া প্রয়োজন।
নেগেটিভ ম্যামোগ্রাফিতে ক্যান্সার নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছুই নেই : অনুভূত হওয়ার আগে বা উপসর্গ দেখা যাওয়ার আগে ম্যামোগ্রাফি প্রায়ই ক্যান্সারের উপসর্গ ধরে ফেলতে পারে। সব মিলিয়ে, ম্যামগ্রামে ৮০-৯০ শতাংশ ক্যান্সার সনাক্ত করা যায় এবং ১০-২০ শতাংশ অধরাই থেকে যায়।
ক্যান্সার সম্পর্কে কিছু বলারই প্রয়োজন নেই : ক্যান্সার সম্পর্কে কিছু বলা কঠিন। বিশেষ করে, যখন আপনি জানেন না কিভাবে আপনি সাহায্য করবেন বা ক্যান্সার আক্রান্ত ব্যক্তি আপনাকে কিভাবে নেবেন। আপনার সহমর্মী, পরিবারের সদস্য, বন্ধু বা সহকর্মী ক্যান্সারে ভুগলে, খোলাখুলি ক্যান্সার সম্পর্কে আলোচনা ও চিকিৎসার সঠিক পথে এগোনো রোগের উন্নতিতে সাহায্য করে।
ক্যান্সারের চিকিৎসায় কিছু করার নেই : ইটি একটি কাল্পনিক ধারণা ও শ্রুতিকথা। খোলাখুলিভাবে বলতে গেলে সঠিক সময়ে সঠিক ভাবে ধরা পড়লে ক্যান্সারের চিকিৎসায় অনেক কিছুই করার আছে। পরিচিত ক্যান্সারগুলোর প্রায় ১/৩ ভাগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
ক্যান্সারের কোনো লক্ষণ বা উপসর্গ নেই : ইটা ঠিক যে, গোড়ার দিকে সব ক্যান্সারের উপসর্গ ধরা পড়ে না, কিন্তু ব্রেস্ট (স্তন), গ্রীবা বা ঘাড় সম্পর্কিত (কার্ভিক্যাল), চামড়া (স্কীন), কলোরেক্টাল এবং কিছু শৈশবের ক্যান্সার সহ অনেক কান্সারের ক্ষেত্রে গোড়ার দিকে ক্যান্সার নির্দ্ধারণ খুব জরুরী। গোড়ার দিকে ক্যান্সার নির্দ্ধারণের জন্য প্রয়োজন সচেতনতা ও ক্যান্সারের উপসর্গ ও লক্ষণ চিনে নেওয়ার শিক্ষা।
তথ্যসূত্র:
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/6/2020