অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

ক্যান্সারের নতুন সাত বাহকের হদিশ মিলল

ক্যান্সারের নতুন সাত বাহকের হদিশ মিলল

তাকে রোখার হাতিয়ার এখনও তেমন ভাবে, ততটা আমাদের হাতে না এলেও, তাকে দ্রুত ছড়িয়ে দেওয়ার সম্ভাব্য ‘কাণ্ডারী’দের সংখ্যা উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে! আর সম্ভাব্য ‘কাণ্ডারী’দের সংখ্যা উত্তরোত্তর বাড়ছে বলেই দিন কে দিন তারাও বোধহয় অপ্রতিরোধ্যই হয়ে উঠছে!

ক্যান্সারের কথা বলছি। সেই ক্যান্সারকে আরও দ্রুত, কার্যত ‘প্রতিরোধহীন’ ভাবে ছড়িয়ে দেওয়ার নতুন আরও সাত-সাতটি ‘কারিগর’-এর হদিশ মিলেছে সম্প্রতি। একেবারেই হালে ক্যান্সারের সম্ভাব্য স্রষ্টাদের (কার্সিনোজেনিক) তালিকায় নতুন ওই সাত ‘কারিগর’-এর নাম জুড়েছে আমেরিকার ‘ডিপার্টমেন্ট অফ হেল্থ অ্যান্ড হিউম্যান সার্ভিসেস’। আর সেই তালিকাটি তারা তুলেও দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র হাতে।

‘ন্যাশনাল টক্সিকোলজি প্রোগ্রামে’ র ৩ নভেম্বরের সেই রিপোর্ট

মার্কিন সংস্থা ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ এনভায়রনমেন্টাল হেল্‌থ সায়েন্সেস’ (এনআইএইচ)-এর ‘ন্যাশনাল টক্সিকোলজি প্রোগ্রামে’র ‘ফোর্টিন্থ রিপোর্ট অন কার্সিনোজেন’ (আরওসি, প্রকাশিত ৩ নভেম্বর)-এ ওই নতুন সাত সম্ভাব্য ‘কারিগর’-এর নামধাম জানানো হয়েছে। এর ফলে, তালিকায় ক্যান্সারের সম্ভাব্য ‘কারিগরে’র সংখ্যা বেড়ে হল ২৪৮।

‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ এনভায়রনমেন্টাল হেল্‌থ সায়েন্সেসে’র মিডিয়া সেলের মুখপাত্র লিন্ডা বার্নবউম ই-মেলে পাঠানো প্রশ্নের জবাবে আনন্দবাজারকে লিখেছেন, ‘‘নতুন সাত সম্ভাব্য ‘কারিগরে’র মধ্যে পাঁচটিই ভাইরাস। এদের মধ্যে রয়েছে- ১) মানুষের শরীরে থাকা ‘টি-সেল লিম্ফোট্রোপিক ভাইরাস টাইপ-ওয়ান’, ২) ‘এপস্টিন-বার ভাইরাস’, ৩) ‘কাপোসি সারকোমা-অ্যাসোসিয়েটেড হার্পস-ভাইরাস’, ৪) ‘মার্কেল সেল পলিওমা ভাইরাস’ এবং ৫) ‘হিউম্যান ইমিউনো-ডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস টাইপ-ওয়ান’ (এইচআইভি-ওয়ান)। আর বাকি দু’টি ‘কারিগরে’র অন্যতম- একটি রাসায়নিক মৌল কোবাল্ট ও তার কয়েকটি যৌগ। অন্যটি একটি জৈব যৌগ- ‘ট্রাইক্লোরোইথিলিন’।’’

ক্যান্সারের সদ্য আবিষ্কৃত এই সাত সম্ভাব্য ‘কারিগর’ কেন আমাদের বাড়তি উদ্বেগের কারণ হয়ে হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে?

ওয়াশিংটন স্টেট ইউনিভার্সিটির ভাইরোলজি বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর অনাবাসী ভারতীয় ভাইরোলজিস্ট অনিতা কুলকার্নির কথায়, ‘‘নতুন যে পাঁচটি ভাইরাসের নাম তালিকায় জোড়া হয়েছে, তারা কম করে ২০ রকমের ক্যান্সার সৃষ্টি ও তার বাড়বাড়ন্তের কারণ হয়ে উঠতে পারে। যেমন এইচআইভি-ওয়ান ভাইরাস এড্‌স ছড়ানোর পাশাপাশি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাটিকেও পঙ্গু, দুর্বল করে দেয়। তার ফলে মানুষের শরীরে ক্যান্সারের স্রষ্টা অন্য ভাইরাসগুলির হানা-প্রতিরোধের শারীরিক ক্ষমতাও তা কমিয়ে দেয় উল্লেখযোগ্য ভাবে। আমরা দেখেছি, এইচআইভি-ওয়ান ভাইরাস থেকে সার্ভাইক্যাল ক্যান্সার,

কনজাঙ্কটাইভ্যাল আই ক্যান্সার আর নন-মেলানোমা স্কিন ক্যান্সার হয়। সারা বিশ্বে মানুষের যত রকমের ক্যান্সার হয়, দেখা গিয়েছে তার ১২ শতাংশের জন্যই মূলত দায়ী নানা রকমের ভাইরাস। ক্যান্সারের সম্ভাব্য ‘কারিগর’ নতুন যে পাঁচটি ভাইরাসের হদিশ মিলেছে, তার কোনওটিরই টিকা বা প্রতিষেধক এখনও বেরোয়নি। কবে সেগুলির আবিষ্কার হবে, তারও কোনও ঠিক-ঠিকানা নেই। ফলে এই ভাইরাসগুলি এখন উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে যথেষ্টই।’’

জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমিউনোলজি বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর অনিতা সরকার বলছেন, ‘‘ওই ভাইরাসগুলি ছাড়া ক্যান্সারের বাকি দুই সম্ভাব্য ‘কারিগরে’র অন্যতম- জৈব যৌগ ‘ট্রাইক্লোরোইথিলিন’ মূলত লাগে হাইড্রোফ্লুরোকার্বনের শিল্পোৎপাদনে। সেনাবাহিনীতেও এর ব্যবহার হয়। আর রাসায়নিক মৌল কোবাল্ট ও তার হরেক রকমের যৌগের বহুল ব্যবহার হয় রিচার্জিয়েব্‌ল ব্যাটারি, টাইল্‌স, সেরামিক্‌স আর নীল ছোপ ছোপ কাচে। সৌর প্যানেলেও ব্যবহার হয় কোবাল্ট ও তার কয়েকটি যৌগের। অন্যান্য প্রাণীর শরীরে ক্যান্সার সৃষ্টিতে কোবাল্টের ভূমিকা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত হয়েছে। তবে মানুষের শরীরে তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ এখনও মেলেনি। কিন্তু কোবাল্ট ও তার কয়েকটি যৌগ কী ভাবে প্রাণীর শরীরে ক্যান্সার সৃষ্টির কারণ হয়ে উঠছে, তা গবেষণাগারে পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। তবে কোবাল্ট থেকে যেহেতু আধানযুক্ত কণা (চার্জড্ পাটিক্‌ল বা আয়ন) বেরিয়ে আসে শরীরের ভেতর, তাই সেগুলি আমাদের ডিএনএ-রও প্রচুর ক্ষতি করতে পারে। যার ফলে, তার ক্যান্সারের কারণ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে যথেষ্টই। কোবাল্ট অবশ্য ভিটামিন বি-টুয়েলভেও পাওয়া যায়। তবে প্রোটিন সেই কোবাল্টকে শক্তিশালী বাঁধনে বেঁধে রাখে বলে তার থেকে আয়ন বেরিয়ে আসে না। তাই ভিটামিন বি-টুয়েলভে পাওয়া কোবাল্ট মোটেই ক্ষতিকারক হয় না।’’

তবে সদ্য আবিষ্কৃত এই সাত ‘কারিগর’ থাকলেই কি মানবশরীরে ক্যান্সার হবে? এটা কি একশো ভাগ নিশ্চিত?

আরিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজি বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর জয়তী সিংহ বলছেন, ‘‘মোটেই একশো ভাগ নিশ্চিত নয়। এনআইএচ-এর ‘ফোর্টিন্থ রিপোর্ট অন কার্সিনোজেন’-এ তাই ওই নতুন সাত ‘কারিগর’কে ‘সম্ভাব্য’ই বলা হয়েছে। কারণ, যিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হবেন, তাঁর শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা কতটা, ওই নতুন সাত ‘কারিগরে’র হানাদারির তীব্রতা কতটা, আর সেই তীব্রতা কমানোর ক্ষেত্রে আক্রান্ত কতটা, কী ব্যবস্থা নিয়েছেন বা নিতে চলেছেন, তার ওপর অনেক কিছুই নির্ভর করে বলেও ওই রিপোর্টে জানানো হয়েছে।’’

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

সর্বশেষ সংশোধন করা : 2/23/2024



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate