অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

ক্যানসারের বড় কারণ জিন বদলের নিয়তিই

ক্যানসারের বড় কারণ জিন বদলের নিয়তিই

কখনও ধূমপান করেননি। মদ্যপানের অভ্যাসও ছিল না। তবু থাবা বসাল ক্যানসার। ধরা পড়তেই রোগীর আত্মীয়দের প্রশ্ন, কেন এমন হল? আমেরিকার জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই গবেষক সম্প্রতি জানিয়েছেন, এ সব ক্ষেত্রে অনেক সময়ই দায়ী হতে পারে জিনের গঠনে আকস্মিক বিপজ্জনক পরিবর্তন বা ‘মিউটেশন’। এক নতুন গাণিতিক মডেলের উপর ভিত্তি করে তাঁরা জানাচ্ছেন, অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ ক্যানসারের ক্ষেত্রে এই মিউটেশনই দায়ী। শুক্রবার ‘সায়েন্স’ জার্নালে তাঁদের গবেষণাপত্রটি প্রকাশ হয়েছে।

কর্কট রোগের একাধিক কারণের মধ্যে জিনের ‘অ্যাক্সিডেন্টাল’ মিউটেশন যে অন্যতম, সে কথা  চিকিৎসা-দুনিয়া জানত না এমন নয়।  তা হলে ওই দুই বিজ্ঞানী নতুন কী জানালেন? চিকিৎসক-অধ্যাপক বার্ট ভোগেলস্টেইন বলছেন, “ক্যানসারের পিছনে বংশধারা, জীবনযাত্রা ও ভাগ্যের সমবেত ভূমিকা থাকে, এটাই বলতে চাই। তবে এই তিন কারণের কোনটি ঠিক কতটা ভূমিকা নেয়, তা জানতে আমরা নয়া গাণিতিক মডেল তৈরি করেছি।” এ কাজে তাঁকে সাহায্য করেছেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই অঙ্কোলজি বিভাগের আর এক গবেষক, ক্রিশ্চিয়ান টোমাসেট্টি।

সেই গাণিতিক বিশ্লেষণ থেকে জানা যাচ্ছে, অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ ক্যানসারের কারণ হতে পারে জিনের আকস্মিক মিউটেশন। যাকে দুর্ভাগ্য বা ‘ব্যাড লাক ফ্যাক্টর’ বলছেন গবেষকরা। কারণ তাঁদের দাবি, কার কখন এ ধরনের মিউটেশন হবে তা আগে থেকে টের পাওয়া সম্ভব নয়। কোষ বিভাজনের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া চলাকালীনই হয়তো জিনের গঠনে সেই বিপজ্জনক পরিবর্তন ঘটে গেল। গোটাটাই আকস্মিক।

কলকাতার ক্যানসার-চিকিৎসক সুবীর গঙ্গোপাধ্যায় অবশ্য এই ‘ব্যাড লাক’ ব্যাখ্যায় বিশ্বাসী নন। তাঁর মতে, “যে কোনও শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তনের নির্দিষ্ট ধারা থাকে। কারণ থাকে। সুতরাং যে মিউটেশনকে আকস্মিক বলা হচ্ছে, তা হয়তো আকস্মিক নয়।” তিনি আরও জানালেন, এই মিউটেশনের কারণ খোঁজাটাই আসল কথা। তবেই ক্যানসার রোখা যাবে। তবে যে ভাবে গাণিতিক মডেলের উপর ভিত্তি করে একটা পরিসংখ্যান দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে ওই গবেষণাপত্রে, তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন সুবীরবাবু।

টোমাসেট্টি জানাচ্ছেন, প্রথমে দেহের ৩১টি কোষকলার (টিস্যু) স্টেম সেল বিভাজন কী ভাবে হচ্ছে, তা নিয়ে বিশদ পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালান তাঁরা। কত বার ওই স্টেম সেলগুলির বিভাজন হচ্ছে, তারও হিসেব রাখা হয়।

দেখা যায়, যে সব কোষকলায় তুলনামূলক ভাবে বেশি স্টেম সেল বিভাজন হচ্ছে, তার ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা তত বেশি। কারণ সে ক্ষেত্রে মিউটেশনের আশঙ্কাও বেশি। উদাহরণ হিসেবে ভোগেলস্টেইন দেখান, ক্ষুদ্রান্ত্রের কোষকলার তুলনায় কোলনের কোষকলার স্টেম সেল অনেক বেশি বিভাজিত হয়। ক্ষুদ্রান্ত্রের ক্যানসারের তুলনায় কোলন ক্যানসারের আধিক্যও বেশি। স্টেম সেল বিভাজনের উপর ভিত্তি করে হরেক কিসিমের ক্যানসারকে দু’ভাগে ভাগ করেছেন তাঁরা। প্রথম দলে ২২ ধরনের ক্যানসারকে রাখা হয়েছে। এগুলি মূলত স্টেম সেল বিভাজন তথা ‘ব্যাড লাক ফ্যাক্টর’-এর তীব্রতার উপর নির্ভরশীল। দ্বিতীয় দলে রয়েছে ৯ ধরনের ক্যানসার। যেগুলির পিছনে কোষ বিভাজন, বংশধারা ও জীবনযাত্রা তিনটিরই সমবেত ভূমিকা রয়েছে। ফলে ক্যানসার শল্য-চিকিৎসক গৌতম মুখোপাধ্যায়ের সাবধানবাণী, “ক্যানসার নিয়ে এখনও সব কিছু জানতে পারেননি গবেষকরা। তবে জীবনযাত্রার মান যে অন্যতম কারণ সেটা প্রতিষ্ঠিত। সুতরাং সব সময়ই সেটা নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত।”

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা, ৩ জানুয়ারি ২০১৫।

সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/28/2020



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate