অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

কিডনি পাচারচক্র ঠেকাতে একগুচ্ছ সুপারিশ রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের

কিডনি পাচারচক্র ঠেকাতে একগুচ্ছ সুপারিশ রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের

কিডনি প্রতিস্থাপনে টাকার লেনদেন বন্ধে কড়া পদক্ষেপের ব্যবস্থা রয়েছে আইনে। তবে আইনের ফাঁক গলে কিডনি পাচারচক্রও চলছে রমরমিয়ে। কিন্তু সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেখে যিনি কিডনি দান করছেন, তাঁর ‘স্বার্থ’ রক্ষা করার পর্যাপ্ত সংস্থান আইনে নেই। কিডনি দান করার পর ওই দাতা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁর দায় কে নেবে? তাঁর চিকিত্সার ব্যবস্থাই বা হবে কী ভাবে?

কিডনিদাতার ‘স্বার্থ’রক্ষায় গ্রহীতার দায়িত্ব নিশ্চিত করতে তাই সরকারকে একগুচ্ছ সুপারিশ পাঠাল রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নপরাজিত মুখোপাধ্যায় ও মণিশঙ্কর দ্বিবেদীর বেঞ্চ সম্প্রতি এ নিয়ে লিখিত প্রস্তাব পাঠিয়েছে স্বরাষ্ট্র সচিবের দফতরে। স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে সুপারিশগুলি নিয়ে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে বলেছে কমিশন। আইনের কড়াকড়ি এড়াতে কিডনি পাচারচক্র যে ভাবে মাথাচাড়া দিয়েছে, কমিশনের সুপারিশ কার্যকর হলে, তা অনেকটাই ঠেকানো যাবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। স্বাস্থ্য সচিব মলয় দে-র মন্তব্য, ‘এমন কোনও সুপারিশ আমাদের কাছে আসেনি। তা হাতে পাওয়ার আগে কিছু বলতে পারব না।’ তবে স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, আইনি পরিকাঠামোয় এটা সম্ভব নয়। এটা ঠিক যে, আইনের বর্তমান কাঠামোয় লুকিয়ে-চুরিয়ে টাকার লেনদেন হয়। তবে আইনানুগ ভাবে কিডনিদাতার ভবিষ্যৎ চিকিত্সা ও বিমার দায়ভারগ্রহীতার কাঁধে চাপানো সম্ভব নয়। তবে আইনে সংশোধন আনতে কেন্দ্রের কাছে প্রস্তাব পাঠাতে পারে রাজ্য।

কেন কিডনি প্রতিস্থাপনের বিষয়টি নিয়ে এত তত্পর কমিশন? কমিশন সূত্রের খবর, বছর পাঁচেক আগে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেখে কিডনি দান করতে উত্সাহী হন সতীনাথ পাল। বিজ্ঞাপনে কোথাও টাকার লেনদেনের বিষয়টি লেখা না-থাকলেও গ্রহীতার পরিবারের সঙ্গে তিন লক্ষ টাকার বিনিময়ে কিডনি প্রতিস্থাপনের চুক্তি হয় সতীনাথবাবুর। প্রতিস্থাপন হলেও তিনি টাকা পাননি। গ্রহীতা সামান্য কিছু টাকা দিয়ে বাকি টাকা দিতে অস্বীকার করেন। এ নিয়ে শ্রীরামপুর থানায় অভিযোগ করেন সতীনাথবাবু। ১৯৯৪-এর অঙ্গ প্রতিস্থাপন আইন অনুযায়ী, এই ধরনের প্রতিস্থাপনে যে কোনও ধরনের আর্থিক লেনদেনই বেআইনি। তবে শ্রীরামপুর থানার তত্কালীন আইসি কিডনিদাতার হয়ে মধ্যস্থতা করে ৫০ হাজার টাকা পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেন। তাতেও সন্ত্তষ্ট না-হয়ে রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের দ্বারস্থ হন সতীনাথবাবু। কমিশন তার সুপারিশে জানিয়েছে, অঙ্গ প্রতিস্থাপন আইনের ২ (কে) ধারায় প্রতিস্থাপনের জন্য ‘পেমেন্ট’, অর্থাৎ টাকা বা টাকার সমতুল কিছু বিনিময় করা যাবে না বলে উল্লেখ রয়েছে। তবে অঙ্গ প্রতিস্থাপন-সংরক্ষণ অথবা কিডনি দানজনিত কোনও আর্থিক বা শারীরিক ক্ষতি সংক্রান্ত পরবর্তী ‘ক্ষতিপূরণ’-এর নির্দিষ্ট উল্লেখ নেই। তা ছাড়া আইনের কড়াকড়ি এড়াতে অনেক সময়েই এই ধরনের বিজ্ঞাপনে দাতার সহানুভূতি আকর্ষণ করতে অনুচ্চারিত ভাবে আর্থিক লেনদেনের ইঙ্গিত থাকে। কমিশনের সুপারিশ, এই ধরনের বিজ্ঞাপন প্রকাশ হলেই তার উপর সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে সরকারকে। পাশাপাশি এই ধরনের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে কোনও কিডনি বা অঙ্গদাতা প্রতারকের পাল্লায় পড়ছেন কি না, তা-ও দেখা দরকার। তবে এ সবের থেকেও বেশি তাত্পর্যপূর্ণ কিডনিদাতার ভবিষ্যৎ সুরক্ষার বিষয়টি মাথায় রাখার সুপারিশ। কমিশনের এক আধিকারিকের ব্যাখ্যা, ‘আমাদের মনে হয়েছে কিডনিদাতারও সুরক্ষার বিষয়টি তাঁর মানবাধিকারের মধ্যেই পড়ে। সেটাও নিশ্চিত করা প্রয়োজন।’ কোনও থানায় এই ধরনের অভিযোগ এলে যাতে পুলিশ কোনও ভাবেই মধ্যস্থতা না-করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে জানায়, সে ব্যাপারেও রাজ্য পুলিশের ডিজিকে নিশ্চিত করার কথা জানানো হয়েছে।

সূত্র : হিমাদ্রি সরকার, এই সময়, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

সর্বশেষ সংশোধন করা : 2/14/2020



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate