ভারতে অসংক্রামক (এনসিডি) রোগে মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। দেশে এই ধরনের রোগে মৃত্যুর হার ৪২ শতাংশ এবং এ ধরনের মৃত্যুর একটা বড় অংশ হচ্ছে মানুষের সব চেয়ে উৎপাদনক্ষম সৃজনশীল বয়সে অর্থাৎ ৩৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সের মধ্যে। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের (হু) একটি রিপোর্ট (২০০২) অনুযায়ী, কার্ডিওভাসকুলার রোগ (সিডিভি) ২০২০-র মধ্যে ভারতে রোগে মৃত্যু এবং শারীরিক অক্ষমতার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়াবে। একটি হিসাবে দেখা গেছে ভারতে প্রতি ১০০০ জনের মধ্যে ডায়াবেটিসে ৬২.৪৭ জন, উচ্চ রক্তচাপে ১৫৯.৪৬ জন, ইস্কেমিক হার্ট রোগে (আইএইচডি) ৩৭ জন ভোগেন এবং স্ট্রোকে আক্রান্ত হন ১.৫৪ জন। ভারতে আনুমানিক ২৫ লক্ষ ক্যান্সার আক্রান্ত মানুষ রয়েছেন। তা ছাড়া সমাজের ওপর এনসিডি সংক্রান্ত খরচেরও বিশাল প্রভাব পড়ে। এঁদের অসুস্থতা প্রত্যক্ষত ও পরোক্ষ ভাবে সমাজের ওপর হাজার হাজার কোটি টাকার বোঝা তৈরি করে। এর মধ্যে রয়েছে সরাসরি অসুস্থ মানুষের চিকিৎসাজনিত পারিবারিক খরচ এবং উৎপাদনশীলতা কমের কারণে সমাজের পরোক্ষ খরচ।
এই অসংক্রামক রোগ বা এনসিডি-র ক্ষেত্রে মূল ঝুঁকির উপাদান হল উচ্চ রক্তচাপ, অতিরিক্ত কলেস্টেরল, তামাক ব্যবহার, অস্বাস্থ্যকর খাদ্য, শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা, বাড়াবাড়ি মদ্যপান এবং স্থূলতা। এই কারণগুলোর নিরাময় করা সহজেই সম্ভব। সুতরাং কার্ডিওভাসকুলার রোগ বা সিভিডি এবং ক্যান্সার যদি প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় করা যায় তা হলে অধিকাংশ সময়ই প্রতিরোধ করা সম্ভব। স্বাস্থ্য উন্নয়ন এবং দীর্ঘস্থায়ী এনসিডি-র প্রতিরোধ করার ব্যাপারটা এখনও দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় সে ভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। বর্তমানে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে যে পরিষেবা দেওয়া হয় তাতে এই রোগগুলোর ক্ষেত্রে ক্লিনিক্যাল পরিষেবার মান যথেষ্ট উন্নত নয়। অতএব এনপিসিডিসিএস-এর (ক্যানসার, ডায়াবেটিস, কার্ডিওভাসকুলার রোগ ও স্ট্রোক নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংক্রান্ত জাতীয় কর্মসূচি; ন্যাশনাল প্রোগ্রাম ফর প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল অফ ক্যানসার, ডায়াবেটিস, কার্ডিওভাসকুলার ডিসিস অ্যান্ড স্ট্রোক) অধীনে উপযুক্ত নীতি-কর্মসূচি-পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে যাতে এনসিডি প্রতিরোধকে কার্যকর ভাবে বাস্তবায়িত করা যায়।
সূত্র: পিআইবি প্রেস বিজ্ঞপ্তি, ৮ জুলাই ২০১০
সর্বশেষ সংশোধন করা : 12/21/2019
জেলবন্দিদের সমস্ত তথ্য কম্পিউটারে বন্দি করে রাখছে ...