গত এক বছর একটা বিতর্ক বার বার সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে। তা হল, জেনেরিক ওষুধ লিখলে ব্র্যান্ড নির্বাচনের ক্ষমতা ডাক্তারবাবুর হাত থেকে ন্যায্যমূল্যের দোকানদারের হাতে চলে যায়। একই জেনেরিক ওষুধের অনেক ব্র্যান্ড আছে, দামেরও ফারাক প্রচুর। তাই চড়া দামের ব্র্যান্ডের জেনেরিক ওষুধই দেবেন দোকানি, সে সম্ভাবনা থেকে যায়। সে ক্ষেত্রে দামে ছাড় দিয়েও বিক্রয়মূল্য যা হবে, তার থেকে বাইরের দোকানে কম দামে ওই ওষুধ পাওয়া যেতে পারে, আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকে।
এমন হচ্ছে কি না, বুঝতে আমরা সমীক্ষা করলাম, ন্যায্যমূল্যের দোকানে ৫০টি সর্বাধিক ব্যবহৃত জেনেরিক ওষুধের (ব্র্যান্ড বা ব্র্যান্ডহীন) দাম কত। তার সঙ্গে বাজারে সর্বাধিক বিক্রীত (Fast Moving) ব্র্যান্ডের দামের তুলনা করে দেখা গেল, প্রায় ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে ন্যায্যমূল্যের দোকানের ওষুধের দাম ওই সর্বাধিক বিক্রীত ব্র্যান্ডের থেকে যথেষ্ট কম!
এই সমীক্ষা থেকে স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলছে, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই নীতি সাধারণ রোগীর ওষুধের খরচ বেশ খানিকটা কমাতে পেরেছে। জেনেরিক নামে প্রেসক্রিপশন লেখা আর সরকারি হাসপাতাল থেকে প্রাপ্ত ওষুধের সরবরাহেও যথেষ্ট উন্নতির লক্ষণ আছে। কী করে এটা সম্ভব হল? এই গবেষণার কাজ করতে গিয়ে মনে হয়েছে, এ বিষয়ে স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের একটা দায়বদ্ধতা জোরালো ভাবে কাজ করছে। চিকিৎসকদের একাংশের বাধা সত্ত্বেও, আধিকারিকদের লাগাতার প্রচেষ্টার জন্যই কম দামে ওষুধ সরবরাহের পরিকল্পনা অনেকটাই সফল হতে পেরেছে। এ বার বোধহয় ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানে নিয়মিত নজরদারি বা ‘সোশ্যাল মনিটরিং’ ব্যবস্থা শক্ত করা দরকার। তা হলে সুফলগুলো দীর্ঘস্থায়ী হবে।
সূত্র : অরিজিতা দত্ত, আনন্দবাজার পত্রিকা, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/14/2019